Thursday 5 October 2017

গান্ধী স্মরণে কালীপিসি

আজ গান্ধীজির জম্মোদিন। আমার সাথে ওনার জীবনের যথেষ্ট মিল আছে। দুজনকেই অনেক লড়াই করতে হয়েছে। অবশ‍্য আমাকে ওনার থেকে একটু বেশীই লড়তে হয়েছে। ওনার সময় তো বিটিশরা কুৎসা অপপোচার করতো না। আমাকে যেমন সবাই অগ্নিকন‍্যা বলে ডাকে, ঠিক তেমনই ওনাকে সবাই বাপুজি বলে ডাকতো। তোমরা যে এখন বাপুজি কেক খাও ঐ কেকের কারখানা উনিই করেছিলেন। আমি যেমন হাওয়াই চটি আর ছাপাশাড়ি পরে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াই উনিও তেমনই সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। ওনার সময়ে যদি মোবাইল থাকতো তাহলে উনিও একটা আইফোন কিনে অহিংসাই পরম ধম্মো লিখে, টুইট করতেন। ডান্ডি মার্চ ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করতেন। উনি সত‍্যাগ্রহে বিশ্বাসী ছিলেন, আর আমি সততার পোতীক। যদিও ইদানিং আমার তেরো হাত কাটআউট একটু কম জনপিয়। 

উনি আমার মতন আন্দোলন করার সময় মাঝেমধ্যেই অনশন করতেন। রবীন্দোনাথ একবার ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙান, সেটা আগেই তোমাদেরকে বলেছি। আমি অবশ্য চকলেট খেয়েই অনশন করতাম। আমাকে যেমন সবাই কন‍্যাশ্রীর জননী বলে, ওনাকেও লোকে জাতীর জনক বলে। উনিও আমার মতন আইন নিয়ে পড়েছিলেন। আমাদের খোকাবাবু যেখানে চাঁদের পাহাড়ের সুটিং করেছিল সেই আফ্রিকায়। তবে ওনার কলেজের বাইরে সিপেম স্টেনগান নিয়ে অপেক্ষা করতো না। তবে ওনাকে আমার মতন সিঙ্গাপুর, লন্ডন, জার্মানি ঘুরে বিনিয়োগ আনার ঝামেলা পোয়াতে হয়নি। আমি যেমন গলায় 'আমরা সবাই চোর' লিখে মহানগর মার্চ করেছিলাম, সিঙ্গুরে সর্ষে চাষের দাবী নিয়ে আন্দোলন করেছিলাম। উনিও ঠিক তেমনই ডান্ডি মার্চ করেছিলেন। 

আমি যেমন ২০১১ আগে প্রায় প্রতি মাসেই দুচারটে বনধ ঢেকে, হাইওয়ে অবরোধ করে সরকারের সাথে অসহযোগিতা করেছিলাম, উনিও ঠিক তেমনই অসহযোগ আন্দোলন করেছিলেন বিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে। আমি যেমন ডেলোতে গোলটেবিল বৈঠক করছি, উনিও তেমনই বিটিশদের সাথে গোলটেবিল বৈঠক করেছিলেন। আমি যেমন ডাক দিয়েছি, সিপেম ভারত ছাড়ো। উনিও ইংরেজদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলন করেছেন। 

এই এই চোপ! চোপ! কেউ কথা বলবে না! তবে এতোকিছু মিল থাকার স্বত্ত্বেও বেশকিছু অমিলও আছে। উনি কিন্তু আমার মতন, কবিতা লিখতে, গান লিখতে, কোটি টাকার ছবি আঁকতে পারতেন না। উনি অহিংসায় বিশ্বাসী আর আমি, বদল নয় বদলা চাই। আমি ওনার থেকে অনেক বেশি রাফ এন্ড টাফ, গুন্ডা কন্টোল করি। চৌরিচৌরায় আগুন লাগলে উনি আন্দোলন থামিয়ে দেন আর আমি বিধানসভা ভাঙচুর করে আন্দোলন শুরু করি। 

হঠাৎ সামনে থেকে উঠে এক দামাল বলল- পিসি, এবারে আমরা বুঝেছি আপনার অনুপ্রেরণা না থাকলে উনি এতকিছু করতেই পারতেন না! পিসি মুচকি হেসে বলল, দুষ্টু। ওনার জন্মদিনে, আমার বড়দাও আজ ওনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ওনাকে স্মরণ করেছেন। যদিও কিছু লোকে কুৎসা করে, বড়দার বড়দা নাকি ওনাকে গুলি করেছিল। যাই হোক সেসব পুরোনো কথা ভুলে গিয়ে আমরা সবাই মোহনভগবত, সরি! সরি! মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে শোদ্ধার সাথে স্মরণ করি চলুন...
ইন্দোনীল একটা গান করে অনুষ্ঠান শেষ করো...

No comments:

Post a Comment