Thursday 19 October 2017

ভূত চতুর্দশীর গল্প

ভূত চতুর্দশীর রাতে কালীঘাট শশ্মানে বেশকিছু বিখ‍্যাত ভূত জমায়েত হয়েছেন। সবাই মিলে রবি'দাকে, মানে রবি ঠাকুরকে সভার সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। সভাপতির চেয়ারে বসে...

রবি ঠাকুর - যাক ছ-বছর ট্রাফিক সিগন‍্যালে ঝোলার পর আজ অন্তত একটু বসতে পারলুম। যা দিনকাল পড়েছে এখন তো রাস্তাঘাটে বেরোতে ভয় লাগে। সেদিন এসবিআই ব‍্যাঙ্কে গিয়েছিলাম একটা দরকারে। ক‍্যাশ কাউন্টারের নতুন ছোকরাটা আমাকে চিনতেই পারলো না! যখন বললাম, আমি রবীন্দ্রনাথ তখন গম্ভীরভাবে বলল, ওহ আপনিই আমাদের কোচবিহারের এক স্টাফকে শুয়োরের বাচ্চা বলেছিলেন তাই না! অবস্থা বেগতিক দেখে আমি সেখান থেকে কেটে পড়লুম।

সিরাজউদ্দৌলা - যাই বলেন, পরিবর্তনের থেকে ব্রিটিশ পিরিয়ড অনেক বেটার ছিল। ওদের বড়লাটকে খাজনা দিলেই মিটে যেত। এখন তো কচিনেতা, বড়নেতা, মিনিমাম ম‍্যাক্সিমাম হাজার ঝামেলা। নীলকর সাহেরাও এদের তোলাবাজী সিন্ডিকেট দেখে লজ্জা পেত।

নেতাজি - হ‍্যাঁ, যাস্ট ভাবা যাচ্ছে না! আমার বাড়ি মেরামতি হবে সেখানেও সিন্ডিকেট ঢুকে পড়েছে! আমার পাত্তা দিস না ঠিক আছে, নাতি তো তোদের দলই করে। তার মুখ চেয়ে অন্তত ছাড় দিতে পারতো!

চিত্তরঞ্জন- তুই একবার ভেবে দেখ সুভাষ, আমরা যে ঘরে বসে কর্পোরেশন চালিয়ে ছিলাম, সেই ঘরে সিবিআই ঘুষখোরটা কিভাবে ঘুষ নিয়েছে সেটার তদন্ত করার জন‍্য যাচ্ছে।

নজরুল - আমিই বৃথাই লিখেছিলাম, কারার ই লৌহ কপাট, ভেঙে ফ‍্যাল... ব্রিটিশ পিরিয়ডে উনি থাকলে, কারাগার ভাঙার কোনো দরকারই পড়তো না। উনি থানায় গিয়ে ভাঙচুর করে, চমকিয়ে ধমকিয়ে ছাড়িয়ে আনতেন।

সত‍্যেন্দ্রনাথ দত্ত - 'আজব ছড়া' বইটা পড়ার পর বুঝেছি, কবিতার ছন্দ কিভাবে মেলাতে হয়।

অবনীন্দ্রনাথ - আমি এখনও ভেবে উঠতে পারিনি ঐ ছবিটার দাম কিরে ১কোটি ৮৬লক্ষ হলো! তবে কন‍্যাশ্রী পুরষ্কার নেওয়ার সময় ও যে ছবিটা উপহার দিয়েছিল, সেটা যে ব‍্যাঙের পৌস্টিকতন্ত্রের সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল।

বিদ‍্যাসাগর - জালি সার্টিফিকেটধারীদের নিয়ে কি আর বলবো! তবে ওদের সবার উচিত একবার করে বর্ণপরিচয় পড়া। ফ্লেক্সে যা বানান ভুল করে!

শ‍্যামা প্রসাদ - উনি কেবল উন্নয়নের জোয়ার আনেননি, উনি এ রাজ‍্যে আরএসএসের জোয়ারও এনেছেন। দাঙ্গা দাঙ্গা খেলায় উনি আমাদের মতন সমান পারদর্শী। আর হবে নাই বা কেন, উনি যে সাক্ষাৎ 'দুর্গা'।

রামকৃষ্ণ - আমার স্ত্রী'র ওপর থেকে আমার বিশ্বাস উনিই তুলে দিয়েছেন। আমার নয়, ওনার অনুপ্রেরণায় প্রোমোটাররা মানুষের মধ্যে 'টাকা মাটি মাটি টাকা' এই বানী বেশ ভাল ছড়িয়েছে।

বিবেকানন্দ - ওনার বড়দা তো আমার শিকাগো বক্তৃতার পাঞ্চ লাইনটা, 'আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা' ঝেপে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলো। ঐ ভাষনের শুরুতেই বলে তো, মেরে প‍্যায়ারে ভাইয়ো ওউর ব‍্যাহেনো...

সত‍্যজিৎ - ওনার কৃপায় আমি মারা গিয়েও কিন্তু এখনও'ধরনী'তেই আছি। বেঁচে থাকলে ফেলুদা সিরিজে আর কয়েটা অ্যাড করতে পারতুম। এই যেমন ডেলোতে কেলো, পাতলেবাস সরগরম, জঙ্গলের হাসির রহস্য। তবে মুকুলের জন‍্য আজ খুব কষ্ট হয়। বেচারা আজও দুষ্টু লোক চিনতে শিখলো না।

সত‍্যেন্দ্রনাথ বসু - আমি শুধু ভাবি, ব‍্যাটা কেষ্টা, কেমিস্ট্রির ক জানেনা। কিন্তু বোমার মশলার মাপ কি করে এত নিখুঁত করে!

রামমোহন - আমি কোন বিধানসভা থেকে ভোটে জিতে এমএলএ হয়েছিলাম সেটা আজও খুঁজছি।

জগদীশ চন্দ্র - আমি গাছের প্রাণ আছে বলেছিলাম। আর এরা তাতেই বার খেয়ে সিঙ্গুরের কংক্রিটের জমিতে সর্সে চাষ করলো! এবারও ভেবে দেখলনা গাছ গুলো বাঁচবে কি করে!

ভূত চতুর্দশীর সভা বেশ ভালোই চলছিলো। হঠাৎ একটা বাচ্চা ছেলে আর একটা বাচ্চা মেয়ে খেলতে খেলতে সেখানে চলে আসে। এতরাতে দুটো বাচ্চাকে শ্মশানে খেলতে দেখে সবাই হকচকিয়ে যায়। তারা কোথা থেকে এখানে কিভাবে এসেছে তা জিঞ্জেস করাতে। বাচ্চা ছেলেটি জানালো, দিন চারেক আগে তাদের দুই ভাইবোনের একসাথে ডেঙ্গু হয়। শুনে বাকিরা সবাই চুপ হয়ে যায়। কেবল একে অপরের মুখের দিকে দেখতে থাকে। তখন তার ছোট বোনটি বলল, না না আমাদের ডেঙ্গু হয়নি। আমরা অজনা জ্বরে মারা গিয়েছি।

(কাল্পনিক গল্প, বাস্তবের সাথে কোনো মিল নেই)

Thursday 5 October 2017

কার্নিভাল কাহিনী

দুর্গা= কৈ রে, বলি তোদের সাজুগুজু করা হলো! তাড়াতাড়ি নে, তোদের পিসি রেড রোডে অপেক্ষা করছে তো। 

সরস্বতী = মা, এই স্কার্টটা কেমন? এটা পরেই ভাবছি এবারে ক‍্যাট ওয়ার্ক করবো! 

দুর্গা = তুই কি পাগল নাকি! এই টাইট মিনিস্কার্ট পরে ওখানে কেউ হাঁটে নাকি! যদি হঠাৎ জ্বর বমি হয়ে যায়! 

সরস্বতী = আরে চিন্তা করছো কেন! আঙ্কেল তো এবারের কার্নিভালে নেই, ভুবনেশ্বরে আছে। তাই কোনো চিন্তা নেই!

দুর্গা = ওরে আঙ্কেল নেই তো কি হয়েছে, আঙ্কেলের ছেলেরা তো আছে। যদি ফস করে ঢুকে পড়ে! তাছাড়া আশেপাশে অনেক দুষ্টু দামালরা থাকবে। বিদায় বেলায় যদি একটা ছোট্টো ঘটনা ঘটে যায়! তোর পিসি তো ক্ষতিপূরণ ঘোষনা করেই খালাস হয়ে যাবে।

সরস্বতী = তাহলে কি পরবো? দিদি নম্বর ওয়ানে জেতা শাড়িটা? নাকি এবছরের লেটেস্ট, বাহুবলী চুড়িদার?

দুর্গা = চুড়িদারটাই পর। বাহুবলী নামটার মধ্যে একটা ইয়ে আছে...

লক্ষী = মা, আমার কন‍্যাশ্রীর বালা দুটো খুঁজেই পাচ্ছি না! পিসি বারবার করে বলে দিয়েছে ও দুটো পরে আসতে। 

দুর্গা = থাক মা, ও দুটো আর পরে কাজ নেই। ওখানে ছিঁচকে চোর থেকে ডাকাত, তোলাবাজ থেকে গুন্ডা সবাই আছে।

লক্ষী = পিসি তো গুন্ডা কন্ট্রোল করে, তাহলে ভয় কিসের?

দুর্গা = সেটা যেমন ঠিক, তেমন তোর পিসি মিলেমিশে ভাগ করে খেতেও বলে।

কার্তিক = মা, আমি ভাবছি, ময়ূরে করে না গিয়ে এবারে সবুজ সাথীর সাইকেলে করে কার্নিভালে যাবো।

দুর্গা = ঐ তো সাইকেলের হাল! দেখিস মাঝপথে ভেঙে যায়!

গনেশ = (সিঙাড়া খেতে খেতে এসে ) মা আমি তাহলে দাদার ময়ূরে চড়ে যাবো?

দুর্গা = না বাবা গনশা, তোমার চাপে যদি ময়ূর মাঝপথে কেঁদে ফেলে তাহলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে! আর তুমি এভাবে সিঙাড়া খেতে খেতে বাইরে বেরিও না, সিবিআই ইডির চোখে একবার পড়লে আর রক্ষে থাকবে না!

মহিষাসুর = মা, আমি কি গতবারের মতন মুখ গামছা দিয়ে ঢেকে যাবো?

দুর্গা = ওটা ব‍্যাকডেটেড, পিসি কেসটা অনেকদিন আগেই শেষ করে দিয়েছে।

মহিষাসুর = তাহলে কি ফ্রেঞ্জকাট দাড়ি নিয়ে হাতে ক্রিকেট ব‍্যাট নিয়ে হাঁটবো?

দুর্গা = এটা যদিও টাকটা কেস, তবে আমার মনেহয় তুই একটা রঙিন জহরকোট পরে মাথায় একটা পাহাড়ি টুপি পরে নে। আর হ‍্যাঁ, হাঁটার সময় চোখ দুটো ছোট করে খুলবি।

কলা বৌ = মা, পিসি গতবছর বলেছিলো, পরেরবার বিএমডব্লিউ আর ভলবো করে কার্নিভালে নিয়ে যাবে। তা কই এবারে তো কিছু পাঠালো না!

দুর্গা = বলিহারি বৌমা তোমার আশা, যে বন‍্যা ত্রানে হেলিকপ্টার পাঠায় না, সে আমাদের জন্য ভলবো বিএমডব্লিউ পাঠাবে! খোলা ট্রাকে করে হাওয়া খেতে চলো।

( দুর্গার স্বপরিবারে কার্নিভালে প্রবেশ)

পিসি = আরে গৌরী, নীলসাদা শাড়িতে তোমাকে দারুণ লাগছে! গলায় উজ্জ্বল মুক্তোর হারটা দেখে মনে হচ্ছে ওটা ত্রিফলার গায়ে পেঁছিয়ে থাকা আলো। আমার তো দেখেই অটোমেটিক কবিতা পাচ্ছে..

(এই কথা শোনা মাত্রই সরস্বতী আর লক্ষী কানে হেডফোন গুঁজে দিয়েছে)

দুর্গা = দয়াকরে আমাকে গৌরী নামে ডাকবেন না। আসলে ঐ নামে ডাকলেই মনেহয় কেউ আমাকে এখুনি গূলি করবে।

পিসি = হ‍্যাঁরে গনশ, তোকে কতো করে বলেছি ডায়েট কন্ট্রোল কর। তোর মধ‍্যপ্রদেশ তো পাত্তোকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে। এই ভুড়ি নিয়ে ক‍্যাট ওয়ার্ক হয়! এবারে যাওয়ার সময় এক পেটি সিঙ্গুর সরিষার তেল নিয়ে যাবি। একেবারে কোলেস্টেরল ফ্রী। আর তোর বৌ-টা তো শুকিয়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে আহারে বাংলা বা ইলিশ উৎসবে নিয়ে এসে ভালোমন্দ খাওয়া। 

(কার্তিককে ডিএসএলআর-এ ছবি তুলতে দেখে পিসি রেগে গিয়ে)

পিসি = এই! এই কাতু! ওটা ব‍্যাগে ঢোকা আগে। চালাকি পায়া হ‍্যায়! কার্নিভালে এসে ম‍্যাথুর মতন স্টিং করতা হ‍্যায়!

কার্তিক = আরে না না! আমি ফেসবুকে দেব বলে ছবি তুলছি। 

পিসি = ওসব আমি নেহি জানতা হ‍্যায়! ক‍্যামেরা দেখলেই আমার স্নেহের ভাই গুলো ভয় পায়! আসলে, গোয়াল বার্নিং কাউ ফিয়ার সিঁদুরে ক্লাউড, আরকি!

(কার্তিক ক‍্যামেরা ব‍্যাগে ঢুকিয়ে আবার তীর ধনুক নিয়ে পোজ দিতে শুরু করলো)

পিসি = তুই কি রে কাতু! এখনো তীর ধনুকেই পড়ে আছিস! ওরে কেস্টা ওকে দু-চারটে পেটো অন্তত দে।

(লক্ষীর দিকে তাকিয়ে)
পিসি = তোকে কতোবার ফোন করে বিশ্ব ব‍্যাঙ্গ সম্মেলনে আসতে বললাম, তাও একবারও এলি না! আগে তো প্রায় সুদীপ কাকুর সাথে অ্যাম্বুলেন্সে চড়েও আসতিস! 

(সরস্বতী নোটপ্যাড নিয়ে ব‍্যস্ত। তার দিকে তাকিয়ে খানিকটা রেগে গিয়ে)

পিসি = যতই খুটুর পুটুর করো না কেন, ভুলে যেও না , ইন্টারনেট ব‍্যালেন্স আমার গরমেন্টই ভরে। 

মহিষাসুর = পিসি আমাদের ত্রিপাক্ষিক চুক্তিটার কি হলো?

পিসি = আমি তোর সাথে একটাও কথা বলবো না। আমাকে মা বোলতা হ‍্যায়। ওউর হামার বিরুদ্ধে চক্কান্ত করতা হ‍্যায়!

দুর্গা = পিসি এবারে অন্তত বিদায় দিন। আমার ভোলেবাবা হয়তো আমাকে ভুলেই গেছে..

পিসি = চিন্তা করিস না! যেতে দেরি হবে সেটা আমি হোয়াটস অ্যাপ করে দিয়েছি। আর হ‍্যাঁ, ভোলেবাবা যাতে একাএকা বোরিং না হয় তাই মদনাকে পাঠিয়ে দিয়েছি।

গান্ধী স্মরণে কালীপিসি

আজ গান্ধীজির জম্মোদিন। আমার সাথে ওনার জীবনের যথেষ্ট মিল আছে। দুজনকেই অনেক লড়াই করতে হয়েছে। অবশ‍্য আমাকে ওনার থেকে একটু বেশীই লড়তে হয়েছে। ওনার সময় তো বিটিশরা কুৎসা অপপোচার করতো না। আমাকে যেমন সবাই অগ্নিকন‍্যা বলে ডাকে, ঠিক তেমনই ওনাকে সবাই বাপুজি বলে ডাকতো। তোমরা যে এখন বাপুজি কেক খাও ঐ কেকের কারখানা উনিই করেছিলেন। আমি যেমন হাওয়াই চটি আর ছাপাশাড়ি পরে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াই উনিও তেমনই সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। ওনার সময়ে যদি মোবাইল থাকতো তাহলে উনিও একটা আইফোন কিনে অহিংসাই পরম ধম্মো লিখে, টুইট করতেন। ডান্ডি মার্চ ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ করতেন। উনি সত‍্যাগ্রহে বিশ্বাসী ছিলেন, আর আমি সততার পোতীক। যদিও ইদানিং আমার তেরো হাত কাটআউট একটু কম জনপিয়। 

উনি আমার মতন আন্দোলন করার সময় মাঝেমধ্যেই অনশন করতেন। রবীন্দোনাথ একবার ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙান, সেটা আগেই তোমাদেরকে বলেছি। আমি অবশ্য চকলেট খেয়েই অনশন করতাম। আমাকে যেমন সবাই কন‍্যাশ্রীর জননী বলে, ওনাকেও লোকে জাতীর জনক বলে। উনিও আমার মতন আইন নিয়ে পড়েছিলেন। আমাদের খোকাবাবু যেখানে চাঁদের পাহাড়ের সুটিং করেছিল সেই আফ্রিকায়। তবে ওনার কলেজের বাইরে সিপেম স্টেনগান নিয়ে অপেক্ষা করতো না। তবে ওনাকে আমার মতন সিঙ্গাপুর, লন্ডন, জার্মানি ঘুরে বিনিয়োগ আনার ঝামেলা পোয়াতে হয়নি। আমি যেমন গলায় 'আমরা সবাই চোর' লিখে মহানগর মার্চ করেছিলাম, সিঙ্গুরে সর্ষে চাষের দাবী নিয়ে আন্দোলন করেছিলাম। উনিও ঠিক তেমনই ডান্ডি মার্চ করেছিলেন। 

আমি যেমন ২০১১ আগে প্রায় প্রতি মাসেই দুচারটে বনধ ঢেকে, হাইওয়ে অবরোধ করে সরকারের সাথে অসহযোগিতা করেছিলাম, উনিও ঠিক তেমনই অসহযোগ আন্দোলন করেছিলেন বিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে। আমি যেমন ডেলোতে গোলটেবিল বৈঠক করছি, উনিও তেমনই বিটিশদের সাথে গোলটেবিল বৈঠক করেছিলেন। আমি যেমন ডাক দিয়েছি, সিপেম ভারত ছাড়ো। উনিও ইংরেজদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলন করেছেন। 

এই এই চোপ! চোপ! কেউ কথা বলবে না! তবে এতোকিছু মিল থাকার স্বত্ত্বেও বেশকিছু অমিলও আছে। উনি কিন্তু আমার মতন, কবিতা লিখতে, গান লিখতে, কোটি টাকার ছবি আঁকতে পারতেন না। উনি অহিংসায় বিশ্বাসী আর আমি, বদল নয় বদলা চাই। আমি ওনার থেকে অনেক বেশি রাফ এন্ড টাফ, গুন্ডা কন্টোল করি। চৌরিচৌরায় আগুন লাগলে উনি আন্দোলন থামিয়ে দেন আর আমি বিধানসভা ভাঙচুর করে আন্দোলন শুরু করি। 

হঠাৎ সামনে থেকে উঠে এক দামাল বলল- পিসি, এবারে আমরা বুঝেছি আপনার অনুপ্রেরণা না থাকলে উনি এতকিছু করতেই পারতেন না! পিসি মুচকি হেসে বলল, দুষ্টু। ওনার জন্মদিনে, আমার বড়দাও আজ ওনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ওনাকে স্মরণ করেছেন। যদিও কিছু লোকে কুৎসা করে, বড়দার বড়দা নাকি ওনাকে গুলি করেছিল। যাই হোক সেসব পুরোনো কথা ভুলে গিয়ে আমরা সবাই মোহনভগবত, সরি! সরি! মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে শোদ্ধার সাথে স্মরণ করি চলুন...
ইন্দোনীল একটা গান করে অনুষ্ঠান শেষ করো...