ভূত চতুর্দশীর রাতে কালীঘাট শশ্মানে বেশকিছু বিখ্যাত ভূত জমায়েত হয়েছেন। সবাই মিলে রবি'দাকে, মানে রবি ঠাকুরকে সভার সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। সভাপতির চেয়ারে বসে...
রবি ঠাকুর - যাক ছ-বছর ট্রাফিক সিগন্যালে ঝোলার পর আজ অন্তত একটু বসতে পারলুম। যা দিনকাল পড়েছে এখন তো রাস্তাঘাটে বেরোতে ভয় লাগে। সেদিন এসবিআই ব্যাঙ্কে গিয়েছিলাম একটা দরকারে। ক্যাশ কাউন্টারের নতুন ছোকরাটা আমাকে চিনতেই পারলো না! যখন বললাম, আমি রবীন্দ্রনাথ তখন গম্ভীরভাবে বলল, ওহ আপনিই আমাদের কোচবিহারের এক স্টাফকে শুয়োরের বাচ্চা বলেছিলেন তাই না! অবস্থা বেগতিক দেখে আমি সেখান থেকে কেটে পড়লুম।
সিরাজউদ্দৌলা - যাই বলেন, পরিবর্তনের থেকে ব্রিটিশ পিরিয়ড অনেক বেটার ছিল। ওদের বড়লাটকে খাজনা দিলেই মিটে যেত। এখন তো কচিনেতা, বড়নেতা, মিনিমাম ম্যাক্সিমাম হাজার ঝামেলা। নীলকর সাহেরাও এদের তোলাবাজী সিন্ডিকেট দেখে লজ্জা পেত।
নেতাজি - হ্যাঁ, যাস্ট ভাবা যাচ্ছে না! আমার বাড়ি মেরামতি হবে সেখানেও সিন্ডিকেট ঢুকে পড়েছে! আমার পাত্তা দিস না ঠিক আছে, নাতি তো তোদের দলই করে। তার মুখ চেয়ে অন্তত ছাড় দিতে পারতো!
চিত্তরঞ্জন- তুই একবার ভেবে দেখ সুভাষ, আমরা যে ঘরে বসে কর্পোরেশন চালিয়ে ছিলাম, সেই ঘরে সিবিআই ঘুষখোরটা কিভাবে ঘুষ নিয়েছে সেটার তদন্ত করার জন্য যাচ্ছে।
নজরুল - আমিই বৃথাই লিখেছিলাম, কারার ই লৌহ কপাট, ভেঙে ফ্যাল... ব্রিটিশ পিরিয়ডে উনি থাকলে, কারাগার ভাঙার কোনো দরকারই পড়তো না। উনি থানায় গিয়ে ভাঙচুর করে, চমকিয়ে ধমকিয়ে ছাড়িয়ে আনতেন।
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত - 'আজব ছড়া' বইটা পড়ার পর বুঝেছি, কবিতার ছন্দ কিভাবে মেলাতে হয়।
অবনীন্দ্রনাথ - আমি এখনও ভেবে উঠতে পারিনি ঐ ছবিটার দাম কিরে ১কোটি ৮৬লক্ষ হলো! তবে কন্যাশ্রী পুরষ্কার নেওয়ার সময় ও যে ছবিটা উপহার দিয়েছিল, সেটা যে ব্যাঙের পৌস্টিকতন্ত্রের সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল।
বিদ্যাসাগর - জালি সার্টিফিকেটধারীদের নিয়ে কি আর বলবো! তবে ওদের সবার উচিত একবার করে বর্ণপরিচয় পড়া। ফ্লেক্সে যা বানান ভুল করে!
শ্যামা প্রসাদ - উনি কেবল উন্নয়নের জোয়ার আনেননি, উনি এ রাজ্যে আরএসএসের জোয়ারও এনেছেন। দাঙ্গা দাঙ্গা খেলায় উনি আমাদের মতন সমান পারদর্শী। আর হবে নাই বা কেন, উনি যে সাক্ষাৎ 'দুর্গা'।
রামকৃষ্ণ - আমার স্ত্রী'র ওপর থেকে আমার বিশ্বাস উনিই তুলে দিয়েছেন। আমার নয়, ওনার অনুপ্রেরণায় প্রোমোটাররা মানুষের মধ্যে 'টাকা মাটি মাটি টাকা' এই বানী বেশ ভাল ছড়িয়েছে।
বিবেকানন্দ - ওনার বড়দা তো আমার শিকাগো বক্তৃতার পাঞ্চ লাইনটা, 'আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা' ঝেপে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলো। ঐ ভাষনের শুরুতেই বলে তো, মেরে প্যায়ারে ভাইয়ো ওউর ব্যাহেনো...
সত্যজিৎ - ওনার কৃপায় আমি মারা গিয়েও কিন্তু এখনও'ধরনী'তেই আছি। বেঁচে থাকলে ফেলুদা সিরিজে আর কয়েটা অ্যাড করতে পারতুম। এই যেমন ডেলোতে কেলো, পাতলেবাস সরগরম, জঙ্গলের হাসির রহস্য। তবে মুকুলের জন্য আজ খুব কষ্ট হয়। বেচারা আজও দুষ্টু লোক চিনতে শিখলো না।
সত্যেন্দ্রনাথ বসু - আমি শুধু ভাবি, ব্যাটা কেষ্টা, কেমিস্ট্রির ক জানেনা। কিন্তু বোমার মশলার মাপ কি করে এত নিখুঁত করে!
রামমোহন - আমি কোন বিধানসভা থেকে ভোটে জিতে এমএলএ হয়েছিলাম সেটা আজও খুঁজছি।
জগদীশ চন্দ্র - আমি গাছের প্রাণ আছে বলেছিলাম। আর এরা তাতেই বার খেয়ে সিঙ্গুরের কংক্রিটের জমিতে সর্সে চাষ করলো! এবারও ভেবে দেখলনা গাছ গুলো বাঁচবে কি করে!
ভূত চতুর্দশীর সভা বেশ ভালোই চলছিলো। হঠাৎ একটা বাচ্চা ছেলে আর একটা বাচ্চা মেয়ে খেলতে খেলতে সেখানে চলে আসে। এতরাতে দুটো বাচ্চাকে শ্মশানে খেলতে দেখে সবাই হকচকিয়ে যায়। তারা কোথা থেকে এখানে কিভাবে এসেছে তা জিঞ্জেস করাতে। বাচ্চা ছেলেটি জানালো, দিন চারেক আগে তাদের দুই ভাইবোনের একসাথে ডেঙ্গু হয়। শুনে বাকিরা সবাই চুপ হয়ে যায়। কেবল একে অপরের মুখের দিকে দেখতে থাকে। তখন তার ছোট বোনটি বলল, না না আমাদের ডেঙ্গু হয়নি। আমরা অজনা জ্বরে মারা গিয়েছি।
(কাল্পনিক গল্প, বাস্তবের সাথে কোনো মিল নেই)
রবি ঠাকুর - যাক ছ-বছর ট্রাফিক সিগন্যালে ঝোলার পর আজ অন্তত একটু বসতে পারলুম। যা দিনকাল পড়েছে এখন তো রাস্তাঘাটে বেরোতে ভয় লাগে। সেদিন এসবিআই ব্যাঙ্কে গিয়েছিলাম একটা দরকারে। ক্যাশ কাউন্টারের নতুন ছোকরাটা আমাকে চিনতেই পারলো না! যখন বললাম, আমি রবীন্দ্রনাথ তখন গম্ভীরভাবে বলল, ওহ আপনিই আমাদের কোচবিহারের এক স্টাফকে শুয়োরের বাচ্চা বলেছিলেন তাই না! অবস্থা বেগতিক দেখে আমি সেখান থেকে কেটে পড়লুম।
সিরাজউদ্দৌলা - যাই বলেন, পরিবর্তনের থেকে ব্রিটিশ পিরিয়ড অনেক বেটার ছিল। ওদের বড়লাটকে খাজনা দিলেই মিটে যেত। এখন তো কচিনেতা, বড়নেতা, মিনিমাম ম্যাক্সিমাম হাজার ঝামেলা। নীলকর সাহেরাও এদের তোলাবাজী সিন্ডিকেট দেখে লজ্জা পেত।
নেতাজি - হ্যাঁ, যাস্ট ভাবা যাচ্ছে না! আমার বাড়ি মেরামতি হবে সেখানেও সিন্ডিকেট ঢুকে পড়েছে! আমার পাত্তা দিস না ঠিক আছে, নাতি তো তোদের দলই করে। তার মুখ চেয়ে অন্তত ছাড় দিতে পারতো!
চিত্তরঞ্জন- তুই একবার ভেবে দেখ সুভাষ, আমরা যে ঘরে বসে কর্পোরেশন চালিয়ে ছিলাম, সেই ঘরে সিবিআই ঘুষখোরটা কিভাবে ঘুষ নিয়েছে সেটার তদন্ত করার জন্য যাচ্ছে।
নজরুল - আমিই বৃথাই লিখেছিলাম, কারার ই লৌহ কপাট, ভেঙে ফ্যাল... ব্রিটিশ পিরিয়ডে উনি থাকলে, কারাগার ভাঙার কোনো দরকারই পড়তো না। উনি থানায় গিয়ে ভাঙচুর করে, চমকিয়ে ধমকিয়ে ছাড়িয়ে আনতেন।
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত - 'আজব ছড়া' বইটা পড়ার পর বুঝেছি, কবিতার ছন্দ কিভাবে মেলাতে হয়।
অবনীন্দ্রনাথ - আমি এখনও ভেবে উঠতে পারিনি ঐ ছবিটার দাম কিরে ১কোটি ৮৬লক্ষ হলো! তবে কন্যাশ্রী পুরষ্কার নেওয়ার সময় ও যে ছবিটা উপহার দিয়েছিল, সেটা যে ব্যাঙের পৌস্টিকতন্ত্রের সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল।
বিদ্যাসাগর - জালি সার্টিফিকেটধারীদের নিয়ে কি আর বলবো! তবে ওদের সবার উচিত একবার করে বর্ণপরিচয় পড়া। ফ্লেক্সে যা বানান ভুল করে!
শ্যামা প্রসাদ - উনি কেবল উন্নয়নের জোয়ার আনেননি, উনি এ রাজ্যে আরএসএসের জোয়ারও এনেছেন। দাঙ্গা দাঙ্গা খেলায় উনি আমাদের মতন সমান পারদর্শী। আর হবে নাই বা কেন, উনি যে সাক্ষাৎ 'দুর্গা'।
রামকৃষ্ণ - আমার স্ত্রী'র ওপর থেকে আমার বিশ্বাস উনিই তুলে দিয়েছেন। আমার নয়, ওনার অনুপ্রেরণায় প্রোমোটাররা মানুষের মধ্যে 'টাকা মাটি মাটি টাকা' এই বানী বেশ ভাল ছড়িয়েছে।
বিবেকানন্দ - ওনার বড়দা তো আমার শিকাগো বক্তৃতার পাঞ্চ লাইনটা, 'আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা' ঝেপে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলো। ঐ ভাষনের শুরুতেই বলে তো, মেরে প্যায়ারে ভাইয়ো ওউর ব্যাহেনো...
সত্যজিৎ - ওনার কৃপায় আমি মারা গিয়েও কিন্তু এখনও'ধরনী'তেই আছি। বেঁচে থাকলে ফেলুদা সিরিজে আর কয়েটা অ্যাড করতে পারতুম। এই যেমন ডেলোতে কেলো, পাতলেবাস সরগরম, জঙ্গলের হাসির রহস্য। তবে মুকুলের জন্য আজ খুব কষ্ট হয়। বেচারা আজও দুষ্টু লোক চিনতে শিখলো না।
সত্যেন্দ্রনাথ বসু - আমি শুধু ভাবি, ব্যাটা কেষ্টা, কেমিস্ট্রির ক জানেনা। কিন্তু বোমার মশলার মাপ কি করে এত নিখুঁত করে!
রামমোহন - আমি কোন বিধানসভা থেকে ভোটে জিতে এমএলএ হয়েছিলাম সেটা আজও খুঁজছি।
জগদীশ চন্দ্র - আমি গাছের প্রাণ আছে বলেছিলাম। আর এরা তাতেই বার খেয়ে সিঙ্গুরের কংক্রিটের জমিতে সর্সে চাষ করলো! এবারও ভেবে দেখলনা গাছ গুলো বাঁচবে কি করে!
ভূত চতুর্দশীর সভা বেশ ভালোই চলছিলো। হঠাৎ একটা বাচ্চা ছেলে আর একটা বাচ্চা মেয়ে খেলতে খেলতে সেখানে চলে আসে। এতরাতে দুটো বাচ্চাকে শ্মশানে খেলতে দেখে সবাই হকচকিয়ে যায়। তারা কোথা থেকে এখানে কিভাবে এসেছে তা জিঞ্জেস করাতে। বাচ্চা ছেলেটি জানালো, দিন চারেক আগে তাদের দুই ভাইবোনের একসাথে ডেঙ্গু হয়। শুনে বাকিরা সবাই চুপ হয়ে যায়। কেবল একে অপরের মুখের দিকে দেখতে থাকে। তখন তার ছোট বোনটি বলল, না না আমাদের ডেঙ্গু হয়নি। আমরা অজনা জ্বরে মারা গিয়েছি।
(কাল্পনিক গল্প, বাস্তবের সাথে কোনো মিল নেই)