✍✍✍✍ বিজয়ার পেন্নাম ✍✍✍✍
দশমীর দুদিন পরে হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে একটু ভিড় হালকা হতেই সন্ধ্যাবেলায় বিজয়ার প্রণাম করতে হাজির মদনা আর মৃনাল। বৈঠকখানার ঘরে দুজনেই বসে অপেক্ষা করতে লাগল দিদিমনির।
মৃনাল = যাক বাবা, অবশেষে জেলের বাইরে পুজো কাটালুম। ভেবিছিলুম এজম্মে বুঝি আর পুজো দেখা হবে না!
মদনা = তা যা বলেছিস ভাই! আমি তো ভেবিছিলুম এবছরের নবমীতেই বোধহয় বলি দিয়ে দেবে আমাকে!
মৃনাল = অনেকদিন পর পুজোটা চুটিয়ে এনজয় করলুম। অনেকগুলো প্যান্ডেল ঘুরে দেখলুম।
মদনা = আমি তো ভাই ভবানীপুর ছেড়ে বেরুতে পারলুম কই! তবে জেলের থেকে ঢের ভালো। তা হ্যাঁরে, শুনলুম তোর জামিন নাকি মাত্র ২লাখেই হয়ে গেছে? আমার বেলায় ৩১লাখ নিলো কেন তাহলে?
মৃনাল = তুই তো 'পোভাবশালী' তাই তোর স্পেশাল রেট। আমার রেটটা ঐ বিষ মদ, ক্লাব অনুদান, শহীদ স্মরণের মতন গড়পত্তা আরকি! তাছাড়া আমি তো শুধু টাকাই খেয়েছি। তুই তো টাকাও খেয়েছিস আবার এনজয়ও করেছিস।
মদনা = বাজে কথা বলিস না! আমি বেশি খাইনি!
মৃনাল = সে তুই বিন্দু বিন্দু করে কতটা খেয়েছিস সেটা সবাই জানে। আসলে খাওয়ার সময় তোর কোনো হুঁশ থাকেনা আর খাওয়ার পর আর উঠে দাঁড়াতে পারিস না।
মদনা = তোর কাছে কোনো প্রমাণ আছে? শুধু শুধু কেন কুৎসা করছিস আমার নামে!
মৃনাল = দ্যাখ ভাই! আর মুখ খোলাস না! খাওয়ার পর তোর কি অবস্হা হয় সেটা নারদার ভিডিওতে সবাই দেখেছে।
( এমন সময় দিদিমনি বৈঠকখানার ঘরে প্রবেশ করলেন। দুজনেই এক সঙ্গে 'দিদি গো' বলে পায়ের উপর লুটিয়ে পড়ল। দিদি দুজনের মাথায় স্বস্নেহে তার মমতাময়ী হাত দুটো রাখলেন। )
দিদিমনি = ওরে হয়েছে, হয়েছে! এবারে ওঠ!
মৃনাল = দিদি, আমি তোমার জন্য তোমার প্রিয় ল্যাংচা এনেছি।
দিদিমনি = (একটা ল্যাংচা তুলে কামড় দিয়ে ) আহা! কদ্দিন এমন ল্যাংচা খেতে পারবো কে জানে! হাবটা বোধহয় আর করা হবেনা!
মদনা = দিদি, আমি তো এখন 'অভাবশালী' তাই নতুন গুড়ের বাতাসা এনেছি।
দিদিমনি = তুই যে গুড়ের কিছু এনেছিস সেটা আমি ঘরে ঢুকেই বুঝতে পেরেছি। আর 'পোনাম' করে যখন উঠলি তখন বুঝলাম গুড়জল খেয়েও এসেছিস।
(মদনা লজ্জায় মাথা নিচু করে ব্যাপারটা চাপতে গেল অমনি একটা ঢেকুরের সাথে গোটা ঘর দিশির গন্ধে ভরে গেল।)
মদনা = (অভিমানের সুরে) তুমি আমাকে একটুও ভালোবাস না! এতদিন ধরে জেলে ফেলে রেখে দিলে! কতো কষ্ট হয়েছে আমার তুমি জানো!
মৃনাল = তুই কদিন বা জেলে কাটিয়েছিস! সারাক্ষণ তো উডবার্ণেই শুয়েই কাটিয়ে দিলি। জেলে আবার তোর জন্য মিউজিক সিস্টেম থেকে রঙীন জল, রাজকীয় আয়োজন ছিল। আমার অবস্হাটা ভাব! আমি তো ভেবিছিলুম দিদি আমাকে ভুলেই গেছ! তাই তো অভিমানে দু-চারটে কথা বলেছিলুম।
দিদিমনি = ওরে আমি তোদের সব কষ্ট বুঝি! CIB কে সামলানো কি 'চাড্ডি'খানি কথা! কতোবার এজন্য দিল্লি যেতে হয়েছে জানিস! দুটো আসন কুরবানী দিতে হয়েছে। তারপর আবার নারদের ঝামেলা। ওটাকে আগে না সামলালে আমার পুরো মন্ত্রীসভাই তো এতদিন জেলে পুজো সেলিব্রেশন করতো!
মৃনাল = দিদি, কোনো পদ খালি নেই? আমরা কি না খেতে পেয়ে মারা যাবো!
মদনা = মাইরি বলছি, তোমার দিব্যি! এবার থেকে মিনিমামই খাবো, আর ম্যাক্সিমাম নয়!
দিদিমনি = মরণ! তোর যা অবস্হা তাতে মিনিমাম খেলেও প্যানিক অ্যাটাক হবে।
মদনা = তুমি মিছিমিছি আমাদের দূরে সরিয়ে রাখছ! আজ রেড রোডে তো আমাদের দুজনের জন্য দুটো আসনের ব্যবস্থা করতে পারতে! কি সুন্দর সিঁদুর খেলা হচ্ছিলো!
দিদিমনি = সামনে বছর মহালয়া থেকেই সব প্যান্ডেল চালু করে দেব। আর ৭৫ টা ক্লাবকে ডাকবো। তার পরের বছর ২১৪টা ক্লাবকে ডাকবো। 'প্যান্ডেলশ্রী' 'পোতিমাশ্রী' পুরস্কার দেব। তখন তোদেরকে নিশ্চয়ই ডাকবো!
মৃনাল = ওরে মদনা, এবারে তো স্বভাবটা পাল্টা!
দিদিমনি = শোন দুদিন বাদেই দেবজানীরও জামিন হয়ে যাবে। আর মাসখানেকের মধ্যেই দীপ্তটার জামিন হয়ে গেলেই, আবার সবাই মিলে ডেলো ঘুরতে যাবো। (উদাস হয়ে) কতদিন হয়ে গেলো আমার একটাও পেন্টিং আর বিক্রি হয়নি....
বেরোনোর সময় দিদিকে আবার দুজনে প্রণাম করে, মদনার এক চ্যালার মোটর বাইকে চাপাচাপি করে তিনজনে বসল। কারোর মাথায় হেলমেট নেই! দিদি বলল, সাবধানে যাস! বাইক স্টার্ট নিয়ে টলমল করে এগোতেই মদনা হাত তুলে বলল, সেভ ড্রাইভ সেফ লাইফ।
(এটি কাল্পনিক কথপোকথন। বাস্তবের সাথে এর কোনো মিল থাকলে সেটা কাকতালীয়)
দশমীর দুদিন পরে হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে একটু ভিড় হালকা হতেই সন্ধ্যাবেলায় বিজয়ার প্রণাম করতে হাজির মদনা আর মৃনাল। বৈঠকখানার ঘরে দুজনেই বসে অপেক্ষা করতে লাগল দিদিমনির।
মৃনাল = যাক বাবা, অবশেষে জেলের বাইরে পুজো কাটালুম। ভেবিছিলুম এজম্মে বুঝি আর পুজো দেখা হবে না!
মদনা = তা যা বলেছিস ভাই! আমি তো ভেবিছিলুম এবছরের নবমীতেই বোধহয় বলি দিয়ে দেবে আমাকে!
মৃনাল = অনেকদিন পর পুজোটা চুটিয়ে এনজয় করলুম। অনেকগুলো প্যান্ডেল ঘুরে দেখলুম।
মদনা = আমি তো ভাই ভবানীপুর ছেড়ে বেরুতে পারলুম কই! তবে জেলের থেকে ঢের ভালো। তা হ্যাঁরে, শুনলুম তোর জামিন নাকি মাত্র ২লাখেই হয়ে গেছে? আমার বেলায় ৩১লাখ নিলো কেন তাহলে?
মৃনাল = তুই তো 'পোভাবশালী' তাই তোর স্পেশাল রেট। আমার রেটটা ঐ বিষ মদ, ক্লাব অনুদান, শহীদ স্মরণের মতন গড়পত্তা আরকি! তাছাড়া আমি তো শুধু টাকাই খেয়েছি। তুই তো টাকাও খেয়েছিস আবার এনজয়ও করেছিস।
মদনা = বাজে কথা বলিস না! আমি বেশি খাইনি!
মৃনাল = সে তুই বিন্দু বিন্দু করে কতটা খেয়েছিস সেটা সবাই জানে। আসলে খাওয়ার সময় তোর কোনো হুঁশ থাকেনা আর খাওয়ার পর আর উঠে দাঁড়াতে পারিস না।
মদনা = তোর কাছে কোনো প্রমাণ আছে? শুধু শুধু কেন কুৎসা করছিস আমার নামে!
মৃনাল = দ্যাখ ভাই! আর মুখ খোলাস না! খাওয়ার পর তোর কি অবস্হা হয় সেটা নারদার ভিডিওতে সবাই দেখেছে।
( এমন সময় দিদিমনি বৈঠকখানার ঘরে প্রবেশ করলেন। দুজনেই এক সঙ্গে 'দিদি গো' বলে পায়ের উপর লুটিয়ে পড়ল। দিদি দুজনের মাথায় স্বস্নেহে তার মমতাময়ী হাত দুটো রাখলেন। )
দিদিমনি = ওরে হয়েছে, হয়েছে! এবারে ওঠ!
মৃনাল = দিদি, আমি তোমার জন্য তোমার প্রিয় ল্যাংচা এনেছি।
দিদিমনি = (একটা ল্যাংচা তুলে কামড় দিয়ে ) আহা! কদ্দিন এমন ল্যাংচা খেতে পারবো কে জানে! হাবটা বোধহয় আর করা হবেনা!
মদনা = দিদি, আমি তো এখন 'অভাবশালী' তাই নতুন গুড়ের বাতাসা এনেছি।
দিদিমনি = তুই যে গুড়ের কিছু এনেছিস সেটা আমি ঘরে ঢুকেই বুঝতে পেরেছি। আর 'পোনাম' করে যখন উঠলি তখন বুঝলাম গুড়জল খেয়েও এসেছিস।
(মদনা লজ্জায় মাথা নিচু করে ব্যাপারটা চাপতে গেল অমনি একটা ঢেকুরের সাথে গোটা ঘর দিশির গন্ধে ভরে গেল।)
মদনা = (অভিমানের সুরে) তুমি আমাকে একটুও ভালোবাস না! এতদিন ধরে জেলে ফেলে রেখে দিলে! কতো কষ্ট হয়েছে আমার তুমি জানো!
মৃনাল = তুই কদিন বা জেলে কাটিয়েছিস! সারাক্ষণ তো উডবার্ণেই শুয়েই কাটিয়ে দিলি। জেলে আবার তোর জন্য মিউজিক সিস্টেম থেকে রঙীন জল, রাজকীয় আয়োজন ছিল। আমার অবস্হাটা ভাব! আমি তো ভেবিছিলুম দিদি আমাকে ভুলেই গেছ! তাই তো অভিমানে দু-চারটে কথা বলেছিলুম।
দিদিমনি = ওরে আমি তোদের সব কষ্ট বুঝি! CIB কে সামলানো কি 'চাড্ডি'খানি কথা! কতোবার এজন্য দিল্লি যেতে হয়েছে জানিস! দুটো আসন কুরবানী দিতে হয়েছে। তারপর আবার নারদের ঝামেলা। ওটাকে আগে না সামলালে আমার পুরো মন্ত্রীসভাই তো এতদিন জেলে পুজো সেলিব্রেশন করতো!
মৃনাল = দিদি, কোনো পদ খালি নেই? আমরা কি না খেতে পেয়ে মারা যাবো!
মদনা = মাইরি বলছি, তোমার দিব্যি! এবার থেকে মিনিমামই খাবো, আর ম্যাক্সিমাম নয়!
দিদিমনি = মরণ! তোর যা অবস্হা তাতে মিনিমাম খেলেও প্যানিক অ্যাটাক হবে।
মদনা = তুমি মিছিমিছি আমাদের দূরে সরিয়ে রাখছ! আজ রেড রোডে তো আমাদের দুজনের জন্য দুটো আসনের ব্যবস্থা করতে পারতে! কি সুন্দর সিঁদুর খেলা হচ্ছিলো!
দিদিমনি = সামনে বছর মহালয়া থেকেই সব প্যান্ডেল চালু করে দেব। আর ৭৫ টা ক্লাবকে ডাকবো। তার পরের বছর ২১৪টা ক্লাবকে ডাকবো। 'প্যান্ডেলশ্রী' 'পোতিমাশ্রী' পুরস্কার দেব। তখন তোদেরকে নিশ্চয়ই ডাকবো!
মৃনাল = ওরে মদনা, এবারে তো স্বভাবটা পাল্টা!
দিদিমনি = শোন দুদিন বাদেই দেবজানীরও জামিন হয়ে যাবে। আর মাসখানেকের মধ্যেই দীপ্তটার জামিন হয়ে গেলেই, আবার সবাই মিলে ডেলো ঘুরতে যাবো। (উদাস হয়ে) কতদিন হয়ে গেলো আমার একটাও পেন্টিং আর বিক্রি হয়নি....
বেরোনোর সময় দিদিকে আবার দুজনে প্রণাম করে, মদনার এক চ্যালার মোটর বাইকে চাপাচাপি করে তিনজনে বসল। কারোর মাথায় হেলমেট নেই! দিদি বলল, সাবধানে যাস! বাইক স্টার্ট নিয়ে টলমল করে এগোতেই মদনা হাত তুলে বলল, সেভ ড্রাইভ সেফ লাইফ।
(এটি কাল্পনিক কথপোকথন। বাস্তবের সাথে এর কোনো মিল থাকলে সেটা কাকতালীয়)
No comments:
Post a Comment