Wednesday 24 August 2016

কাল্পনিক বক্তৃতা

                                                                 কাল্পনিক বক্তৃতা
আজ কিশোর কুমারের জন্মদিন। উনি বেশ কিছু ভালো গান গেয়ে ছিলেন বটে, কিন্তু পোতিবাদী গান খুব বেশী গাননি। উনি ভার্সেটাইল গায়ক ছিলেন তবে আমার মতন ভার্সেটাইল শিল্পী ছিলেন না। আজ ওনার জন্মদিনে, ওনার সাথে কাটানো কিছু স্মৃতির কথা বারেবারে মনে পড়ছে। আমার জীবনের চলার পথে প্রতিটি পদক্ষেপে আমি ওনাকে খুঁজে পাই। এই! এই! এই! চোপ! চোপ! আমি কি বলছি মন দিয়ে শোনো!
ওনার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় যোগমায়া দেবী কলেজের সোসালে। উনি স্টেজে তখন গান করছেন "রূপ তেরা মস্তানা", আর আমি তখন সামনের সারিতে বসে। সোসালের শেষে আমাদের কালিঘাটের বাড়িতেও আসেন। তোমরা জানো না, কালিঘাট খালের পাড়ে বসেই কিন্তু উনি প্রথম "চিংগারী কোয়ি ভড়কে" গানটি গেয়ে ছিলেন।

সুদীপ্তটাও বড়ো কিশোর পাগল ছিলো। আমার আজও মনে পড়ে ডেলোর বাংলোতে সেই রাতে, সবাই তখন আমার জন্য অপেক্ষা করছিল, আমি আসতেই সুদীপ্ত গেয়ে উঠেছিল "রাত কলি এক খাওব ম্যায়ে আয়ি, অউর গলে কা হার হুয়ি"। আমি তো ওর গানে খুশি হয়ে আমার প্রিয় পেন্টিংটাই দিয়ে দিয়েছিলাম। পরে অবশ্য ও দাম দিয়েছিল। বেচারা কিশোর প্রেমের জন্যই পুলিশের হাতে ধরা পড়ল। দেবজানী কে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে কাশ্মীরের রাস্তায় দুজনে হাত ধরে " হাম দোনো দো প্রেমী, দুনিয়া ছোড় চলে" গাওয়ার কোনো দরকার ছিলো! এখন জেলে বসে "ইয়ে ক্যায়া হুয়া, ক্যায়সে হুয়া" শুনছে। তবে লোকজন টাকা টাকা করে যখন আমার পিছনে ছোটে তখন আমার ঐ গানটার কথাই মনে পড়ে "আদমি যো দে হ্যায়, আদমি যো লেতা হ্যায়, জিন্দেগি ভর ও সাজায়ে পিছা করতি হ্যায়।"
মাস খানেক আগে আলিপুর জেলের পাশ থেকে আসছিলাম, হটাৎ জেলের ভিতর থেকে দেখি কিশোরের কন্ঠ ভেসে আসছে - " বড়ি শুনি শুনি সি হ্যায়, জিন্দেগী ইয়ে জিন্দেগী"। ড্রাইভার বলল ওটা মদনার ঘরে বাজছে। নারদার ভিডিও প্রকাশ হবার পর সত্যিই খুব ভেঙে পড়েছিলাম। তখনও ওনার গান " কুচ তো লোগ ক্যাঁহেঙ্গে, লোগোকা কাম হ্যায় ক্যাঁহনা" আমাকে লড়াই করার শক্তি দিয়েছে। আর ৩৪ বছর ধরে কিশোরের গাওয়া " ইয়ে লাল রঙ, কব মুঝে ছোড়ে গা" গানটা আমি প্রতিদিন রাতে শুনতাম।
সিপিএম যখন কুৎসা করে, কন্যাশ্রী আমাদের প্রকল্প, সাইকেল আমরা চালু করেছি, তখন আমি কানে হেড ফোন লাগিয়ে শুনি " কো ই হোতা জিসকো আপনা, হাম আপনে ক্যাহেলেতে ইয়ারো"। আরে দল থেকে যখন ঐ চাষার ব্যাটাকে বহিষ্কার করলো, তখন তো আমিই আশ্রয় দিলাম। মন্ত্রী করার পর দেখি আমাকে বলছে " হামে অউর জিনে কি চাহত না হোতি, আগর তুম না হোতে"।
এই তো সেদিন নজরুল মঞ্চের গ্রীনরুমে দুজনে একটু গপ্প করছিলাম, হটাৎ ওনার মোবাইলটা গেয়ে উঠল "পল পল পল, দিল কে পাশ তুম .."। উনিও কিশোর ভক্ত সেটা সেদিনই জানলুম। উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন 'তোমার রিংটোন কি'? আমিও আমার রিংটোনটা শুনিয়ে দিলাম " দিলবার মেরে কবতক মুঝে ইঁউহি তড়পায়ো গে"। উনি হেঁসে জানতে চাইলেন এমন রিংটোন সেট করেছি কেন? আমিও হেসে বলেছিলাম 'CBI এফেক্ট'। তারপর উনি বললেন, শেয়ার ইট খোলো আমি একটা ভালো গান পাঠিয়ে দিচ্ছি। ওটাকে রিংটোন কোরো। তাই ওনার দেওয়া কিশোরের সেই গান আজ আমার রিংটোন। কানন, এই কানন! একটা মিসকল দাও তো! রিংটোনটা সবাইকে শোনাই।
কানন মিসকল দিতেই ওনার ফোনে কিশোরের কন্ঠ ভেসে উঠল - " কসমে ওয়াদে নিভায়েঙ্গে হাম ......."

No comments:

Post a Comment