অপারেটর = আমাদের দিদি এখন অন লাইনে!! দিদি, প্রশ্ন আসা
শুরু হয়ে গেছে। এই যে প্রথম প্রশ্ন-‘‘দিদি, আপনি কি খেতে ভালোবাসেন?’’
দিদি = মুড়ি-তেলেভাজা আমার
খুব প্রিয়, আর মিষ্টির মধ্যে ল্যাংচা।
অপারেটর = ‘‘দিদি, আপনার
সাথে ডেলোতে আর কে কে ছিল?’’
দিদি = ঐ তো কুনাল, মুকুল আর সুদীপ্ত। মুকুল বলেছিল শিউলিকে নিয়ে যাবে, কিন্তু আমি বারণ করেছিলাম।
অপারেটর = ‘‘দিদি মদনদা কবে
ছাড়া পাবে?’’
দিদি = ওকে তো আমরা ‘রাজনৈতিক
শহীদ’ ঘোষণা করে দিয়েছি। তবে যদি ভোটের আগে মুখ ফস্কে কিছু বলে ফেলে, তাই একরকম
বাধ্য হয়েই টিকিট দিয়েছি। মাতালটাকে কিছুই বিশ্বাস নেই!
অপারেটর = ‘‘আপনি আর এখন ছবি
আঁকেন না কেন?’’
দিদি = সারাদিন তো
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাতেই কেটে যায়। তাছাড়া আমার অমন শাঁকচুন্নি মার্কা ছবি কিনবে
কে? যে কিনতো সেই তো এখন জেলে!
অপারেটর = ‘‘দিদি, আপনার
সময়ে রাজ্য ধর্ষণ, আর নারী নির্যাতনে শীর্ষে পৌঁছে গেছে।’’
দিদি = আরে, এটা তো গর্বের
বিষয়! আজ আমরা দেশের মধ্যে প্রথম। আরে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন তো সব ছোট্ট ঘটনা!
শরীর থাকলে যেমন জ্বর বমি হয়, তেমন ধর্ষণও হয়! তাছাড়া আমি
তো রেট ঠিক করে দিয়েছি।
অপারেটর = ‘‘দিদি, টেটের
রেজাল্ট কবে বার হবে?’’
দিদি = টাকা জমা দিয়েছ বাবু!
আগে টাকা জমা দাও, তারপরেই বরং খোঁজ নিও কেমন।
অপারেটর = ‘‘দিদি, আপনি এতো
টাকা ক্লাবগুলোকে দান করছেন, অথচ ডি এ বকেয়া কেন?’’
দিদি = ওঃ, তোমরা এমন সব প্রশ্ন
করো না! আরে বাবা, ক্লাবের বেকার ছেলেগুলো একটু ফুর্তি-আনন্দ করবে না! দ্যাখো বাপু,
জীবনে তিনটে জিনিস খুব দরকার: ‘Entertainment Entertainment, Entertainment’। সেই জন্যই তো আমি
এতো মেলা-মোচ্ছব করে বেড়াই। আর সরকারি কর্মচারীদের বলি, ‘‘তোদের এতো এতো ছুটি দিচ্ছি, এমনকি শিবরাত্রি, জামাইষষ্ঠীতেও
ছুটি দিচ্ছি, তাও ডিএ, ডিএ বলে চেঁচামেচি করিস! লজ্জা করে না!"
অপারেটর = নতুন প্রশ্ন: ‘‘দিদি,
আপনার দলের অনেকেই চুরির দায়ে অভিযুক্ত। কেউ লোহা তো, কেউ চন্দন কাঠ। এদের
বিরুদ্ধে আপনি কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন?’’
দিদি = ‘বেচারা’গুলোকে
সিপিএম ‘চক্কান্ত’ করে ফাঁসিয়েছে। আমি এর ‘তীব্ব পোতিবাদ’ করছি।
অপারেটর = এটা মনে হয় আমাদের
লোক লিখছে: ‘‘দিদি, আই লাভ ইউ’’।
দিদি = আই লাভ ইউ টু....যাক
অনেকক্ষণ বাদে একটা সৎ লোককে পেলুম। সেই কখন থেকে হার্মাদগুলো জ্বালিয়ে খেলো।
অপারেটর = দিদি, আবার একটা
হার্মাদ এসে গেছে: ‘‘চা-শ্রমিকদের মৃত্যু মিছিল কবে বন্ধ হবে?’’
দিদি = আরে, সুইজারল্যান্ডে
এমন অনেক ‘ছোট্টো’ ঘটনা ঘটে। DDLJ দেখিসনি! শাহরুখ বলেছিল, ‘বড়ে বড়ে দেশোমে অ্যায়সে
ছোটে ছোটে ঘটনা হোতে হি রহতে হ্যায়!’’
অপারেটর = ‘‘দিদি, আপনার
আমলে এতো সিন্ডিকেটরাজ কেন?’’
দিদি = ব্যাপারটা আমিও
লক্ষ্য করছি। তবে চিন্তার তেমন কিছু নেই, আমি সিন্ডিকেটমন্ত্রী
সব্যসাচীকে বলেছি। ও বলেছে ভোটের পরেই এসব বন্ধ হয়ে যাবে।
অপারেটর = ‘‘দিদি নারদার
ভিডিওতে আপনার নেতা-মন্ত্রীদের ঘুষ নিতে দেখা যাচ্ছে, এটা কি সত্যি!’’
দিদি = তাই ভাবছিলুম, নারদ
এখনও এল না কেন! দ্যাখো ভাই, এটা গভীর ‘চক্কান্ত’। আমরা দলীয় তদন্ত শুরু করেছি।
প্রথমে সীতারাম ইয়েচুরি ও সিদ্ধার্থনাথ সিং আমাদের সন্দেহের তালিকায় ছিল, এখন দেখছি এর পিছনে আরো বড় বড় মাথা অনেকেই জড়িত। তাই আমরা ওবামা, হিলারী ক্লিন্টন, পুতিন, বান কি মুন, এমনকি আই এস আই বা লস্করকেও সন্দেহের আওতায়
রাখছি। জামাতকে আমি ম্যানেজ করে নিয়েছি। আসলে এটা ‘ইন্টারন্যাশানাল চক্কান্ত।’
অপারেটর = দিদি, আবার আমাদের
লোক: ‘‘পিসি, আপনি সত্যিই অগ্নিকন্যা! কমিশনকে যা ঝাড়লেন না! পুরো মাখ্খন..।’’
দিদি = ওরা জানে না, আমি কতটা
রাফ্ এন্ড টাফ্। আমাকে এখানে পুঁতলে দিল্লিতে গিয়ে জন্মাবো। আরে, আমি ‘গুন্ডা
কন্ট্রোল’ করি, আচ্ছা আচ্ছা অফিসারকে চাব্কে লাল করে দিয়েছি।
আমাকে শো-কজের নোটিশ দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে! ও কোন হরিদাস পাল!
অপারেটর = ‘‘দিদি, উড়াল
পুলটা ভাঙল কেন?’’
দিদি = আর কতোবার বলবো! ওটা
বাম আমলের, বাম আমলের, বাম আমলের, বাম আমলের.......।
অপারেটর = ‘‘দিদি, এবারে
নাকি জোট সরকার ক্ষমতায় আসছে!’’
দিদি = এই এই! চোপ্ চোপ্
চোপ্! এমন বললে আমি কিন্তু খেলব না। এই, এই অপারেটর অনেক সহ্য করেছি, এবারে এসব
ঢপের কারবার বন্ধ কর। মাথা গরম হয়ে গেলে কোথায় খিস্তি মারতে শুরু করবো!
অপারেটর = দিদি, দিদি! শুনুন,
শুনুন, এবারে একটা কবিতা বলার অনুরোধ আসছে। ও দিদি! ও দিদি!
(দিদি হাওয়াই চটি পরে, অ্যাপেলের আই-ফোনে কথা বলতে বলতে প্রস্থান করলেন)
No comments:
Post a Comment