Tuesday 25 October 2016

✍✍✍✍✍ আহা'রের নামকরণ ✍✍✍✍✍

 আহা'রের নামকরণ 
'আহারে বাংলা'র খাবারের নামকরণ পিসির মোটেই পছন্দ হয়নি। মেনু লিস্ট পিসি রেগে চিৎকার করে বললেন, 'পরিবত্তন চাই'! তারপর একটা নামাঞ্জলী হাতে নিয়ে প্রতিটি স্টল ঘুরে ঘুরে নতুন নামকরণ করতে লাগলেন। ...
(ভেজ স্টলে গিয়ে)
পিসি = এটা কি?
বয় = আজ্ঞে লাল শাক!
পিসি = মোচ্ছব আমার, আর শাক কিনা লাল! এখুনি এই আইটেম সরিয়ে ফেল। সবুজ শাক নিয়ে আসো। নাম দাও 'সবুজ সাথী'।
বয় = এটা পালং পনির।
পিসি = ওটা তো কমন নাম হয়ে গেলো! নামটা পাল্টে 'পিংলা পনির' করে দাও! ফাটাফাটি সেল হবে!
বয় = পিসি, এটা ওলের ডালনা! অপূর্ব স্বাদ!
পিসি = স্বাদটা ভালো, তবে গলাটা একটু কুটকুট করছে! এটার নাম দাও 'ওলের স্টিং'।
(নন-ভেজ স্টলে গিয়ে )
বয় = এটা টেস্ট করুন, চিংড়ি কচুর ঘন্ট।
পিসি = দারুণ খেতে তো! তবে এটার নাম করে দাও 'চিংড়ি কচুর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব'।
বয় = পিসি, এটা পার্শের ঝাল।
পিসি = দারুণ চাট হবে কিন্তু! মদনার তো খুব প্রিয়। এটার নাম করে দাও 'প্যানিক পার্শে'।
বয় = এটা কাঁচালঙ্কা, ক্যপসিকাম দিয়ে তৈরী 'চিলি তেলাপিয়া'।
পিসি = দারুণ টেস্ট! একবার খেলে 'বারবার চাইতে হবে'। তাই এটার নাম দাও 'তেলাপিয়ার তোলাবাজি'।
বয় = এটা ভেটকির পাতুরি, মুখে দিলেই 'ভ্যানিস'!
পিসি = এটা মুকুলের খুব 'পিয়ো'। তবে এটার নাম করে দাও 'ভ্যনিস ভেটকি'।
বয় = সরষে ইলিশ আর দই কাতলা। একটা করে পেটি টেস্ট করে দেখুন।
পিসি = পেটি বরাবরই মদনার খুব প্রিয়। তা সে কাতলার হোক বা পিয়ালীর! আর সদ্য সিঙ্গুরে সরষে ছড়িয়ে এসেছি। তাই নাম দুটো পাল্টে 'কাতলা কেলেঙ্কারি' 'সিঙ্গুর সরষে ইলিশ' করে দাও।
বয় = চিংড়ির মালাইকারিও আছে। মহিলাদের এটা খুব প্রিয়!
পিসি = গত কয়েক বছর ধরেই এরাজ্যে মহিলাদের প্রায়ই 'জ্বর বমি' হচ্ছে! ঠিকমতো খেতে পাচ্ছেনা। তাই এই আইটেমটার নাম থাক 'চিংডির চিৎকার'।
বয় = পিসি, একটু কোয়েল বিরিয়ানি টেস্ট করে দেখুন।
পিসি = স্বাদ মন্দ নয়! তবে এই নাম রাখলে মল্লিক মশাই 'চাবকাবে'! বরং নাম পাল্টে 'রঞ্জিত বিরিয়ানি' করে দাও। তাহলে মল্লিক মশাইও খুশি আর ঘোষ'দারও স্মৃতিচারণ হয়ে যাবে।
বয় = পিসি, এটা স্পেশাল মটন বিরিয়ানি।
পিসি = না না এই নাম তো ফুটপাতের দোকান থেকে বড়ো রেস্টুরেন্ট সব জায়গায় লেখা থাকে। এটা আগে পাল্টাও! পাল্টে 'মদন বিরিয়ান' করে দাও।
বয় = এটা রোস্টেড ডাক, অপূর্ব স্বাদ।
পিসি = এটা ইদ্রিসের খুব প্রিয়! আগুনে পোড়া জিনিস ও খুব ভালো বাসে। তাই এটার নাম পাল্টে ' ইদ্রিশীয় হাঁস' করে দাও।
বয় = টার্কি, খরগোশ, এমুর আইটেমও আছে।
পিসি = এমু তো বিদেশি পাখি! এটার নাম দাও 'বিদেশি বিনিয়োগ'।
(মিষ্টির স্টলে গিয়ে )
বয় = পিসি নলেন গুড়ের সন্দেস তালশাঁস, কাঁচাগোল্লা আছে।
পিসি = গুড়ের সমস্ত মিষ্টি কেষ্টার নাম দিয়েই করতে হবে। নাহলে ও আবার স্টলে বোমা মারবে। যেমন 'কেষ্টার তালবোম' 'শ্রীকৃষ্ণের গোল্লা'।
বয় = দুধের মিষ্টিও আছে। রসমালাই, চমচম, রাবড়ি।
পিসি = দুধটা কি আমুলের! তাহলে চলবে না! স্টলে যেকোনো মূহুর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে! মিষ্টির ট্রে গুলো পাল্টি খেতে পারে!
বয় = না না! সবই মাদার ডেয়ারীর দুধে তৈরী।
পিসি = 'মাদার' ডেয়ারীর যখন, তাহলে তো এগুলো সব অলৌকিক মিষ্টি। হ্যাঁরে, ল্যাংচার স্টল নেই কেন?
বয় = আজ্ঞে জমি সমস্যা! মানে স্টল দেবার জায়গা নেই!
ঐ যে বড়ো জলের ট্যাঙ্কের গায়ে লেখা আছে ''Drinking Water', ওটা মুছে ওখানে লিখে দাও 'উন্নয়নের জোয়ার '। আর যারা খেতে আসবে তাদেরকে একটার বেশি পানীয় জলের বোতল দেবে না। জল শেষ হয়ে গেলে ওদেরকে উন্নয়নের জোয়ারের ট্যাঙ্ক দেখিয়ে বলবে, 'জল ধরো, জল ভরো'। জল ভরতে যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য আরাবুলকে একটা জলের মগ নিয়ে দাঁড়াতে বলো।

✍✍✍✍ চক্কান্তের গন্ধ ✍✍✍✍

                                  ✍ চক্কান্তের গন্ধ 
মা মারা যাবার পর ভাইপো ছাড়া কালীপিসির সাত কুলে আপন বলে কেউ নেই! রক্তের সম্পর্কের ভাই কার্তিক গনশা আছে বটে, তবে তাদেরকে পিসি বেশি পাত্তা দেয়না। পিসি জানে তারা সারাক্ষণ পিসির সম্পত্তি হাতানোর জন্য নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। পিসি তার ভাইয়েদের কান্ড দেখে তার চিটফান্ডের টাকা থেকে ছবি বিক্রির টাকা, সোনার তরী হোটেল, কবিতার বইয়ের ল্যয়ালিটি স্থাবর অস্থাবর সব সম্পত্তি এমনকি নতুন আইফোন-৭ টাও ভাইপোর নামে উইল করে দিয়েছে। কদিন আগে পিসির ভিক্ষা-মা মারা গেলেন। তারপর থেকে পিসি আরও একা হয়ে পড়েছে। তাই সারাক্ষণ পিসি তার ভাইপোকে আগলে রাখেন।

ছোটবেলা থেকেই ভাইপোও পিসি ন্যাওটা। সারাদিন পিসির নীল-সাদা আঁচল ধরে গোটা পাড়া ঘুরে বেড়াতো। পাড়ার কেউ ভাইপোর নামে অভিযোগ করলে পিসি তার বাড়ি গিয়ে ঝগড়া করে আসে। রীতিমতো পাড়ার সবাইকে হুমকি দিয়ে রেখেছে, ' যদি কেউ ভাইপোর নামে কোনো কুৎসা অপপ্রচার করে আমি কিন্তু চাবকে লাল করে দেব।' এমনিতেই পাড়ার লোকজন জানে কালীপিসি গুন্ডা কন্ট্রোল করেন, তাই পিসির সাথে কেউ ঝামেলায় যায়না। একবার বে-পাড়ার একটা ছোকরার সাথে ভাইপোর কথা-কাটাকাটি হচ্ছিলো। হঠাৎ ছোকরাটি ভাইপোকে সপাটে চড় মারাতে পিসির গুন্ডারা সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে দিয়েছিল।

দুদিন আগে ভাইপো জুলফির সিনেমা দেখে তার এক বন্ধুর সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিল। রাস্তার উল্টোদিক থেকে আসা এক গোয়ালার সাইকেলের সাথে হঠাৎ ধাক্কা! গোয়ালার সাইকেলের ক্যারিয়ারে দুটো দুধ ভর্তি জার থাকায় ভাইপোদের সাইকেলটা ধাক্কা মেরেই পাল্টি খেল। চোট বিশেষ হয়নি! চোখের কোলে একটু ছিলে গেছে আর হাতটা মুচড়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে পাড়ার কিছু লোকে ভাইপোকে নিয়ে বেলতলার পীর বাবার কাছে নিয়ে ছুটলো। মুহূর্তের মধ্যেই খবরটা ছড়িয়ে পড়তে গোটা পাড়া বেলতলায় জড়ো হলো। পিসিও পড়ি মরি করে বেলতলায় ছুটে এলেন। পীর বাবা যখন পিসিকে বলল যে, চিন্তার তেমন কিছু নেই! তখন পিসি হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন। তারপর দুটো বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস নিয়ে উপস্হিত পাড়ার সবার দিকে তাকিয়ে বললেন, গন্ধটা বড়ো সন্দেহ জনক!

এমনিতেই পিসির সন্দেহের শুচিবাই জিনটা বেশ প্রখর! লোকে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে পার্ক সার্কাসের পচা গন্ধ পায় না। কিন্তু উনি কালীঘাট থেকে কালিংপঙের চক্কান্তের গন্ধ পান। পোলার বিয়ারও পিসির কাছে শিশু। তবে হ্যাঁ, উনি কেবল 'চক্কান্ত'এর গন্ধই পান। অন্য কোনো গন্ধে পিসির অলফ্যাক্টরি লোব কাজ করেনা। পিসি গম্ভীর ( গৌতম নয় ) ভাবে বলল, তদন্ত করে দেখতে হবে এটা ম্যান-মেড দুর্ঘটনা কিনা! সঙ্গে সঙ্গে পিসির এক অপহরণ স্পেশালিস্ট সাগরেদ বলল, দিদি বলেন তো গোয়ালা মালটাকে তুলে আনি! পিসি প্রথমে খোঁজ নিলেন, গোয়ালাটা কি লাল পোশাক পরেছিল? যদি না পরে থাকে তাহলে খোঁজ নিয়ে দ্যাখো দুর্ঘটনার দিন ওর চৌত্রিশ গুষ্টির কেউ লাল পোশাক পরেছিল কিনা? এই কেষ্টা, যে ছোকরাটি ভাইপোকে সাইকেলে করে নিয়ে আসছিল ওর মুখটা শুঁকে দ্যাখ তো! গুড়জলের গন্ধ বার হচ্ছে কিনা? কেউ নিশ্চয়ই ওকে 'চক্কান্ত' করে কিছু খাইয়ে দিয়েছে! কিন্তু পিসির কোনো প্রেডিকশানই মিলল না!

পিসির এই পাগলামো দেখে হাসতে হাসতে পাড়ার লোকজন যে যার কাজে ফিরে গেলেও কালীপিসি কিন্তু তখনও বেলতলায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এ সি পি প্রদ্যুম্নের মতন হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলতে লাগলো, কুচ তো গড়বড় হ্যায় ! চক্কান্ত ! চক্কান্ত !
পীর বাবা, পিসির দিকে তাকিয়ে বলল, ভাইপোর অসুখের ঔষধ আমার কাছে আছে, কিন্তু পিসির রোগের ঔষধ আমার কাছে নেই ...

✍✍✍✍ চারমূর্তী ✍✍✍✍

                                 ✍ চারমূর্তী 
পটলডাঙার চারমূর্তী চলল মিলন মেলায় 'আহারে বাংলা' উৎসবে। 
(ট্রেনে যেতে যেতে। অ্যাক্সিডেন্টের ভয়ে প্রাইভেট গাড়ি আর ভাড়া করেনি ) 

প্যালা = খাবারের মোচ্ছব, ভাবা যায়!

হাবুল = এমন একখান আইডিয়া কেবল আমাগো দিদির মাথা থ্যাইকাই বার হতে পারে।

প্যালা = আচ্ছা টেনিদা, খানে আলুরচপ বেগুনি পিঁয়াজী ডালবড়া পাওয়া যাবে?

টেনিদা = (জানালার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে রেগে গিয়ে ) অমন মোফিস্টোফিলিসের মতন কথা বলিস না প্যালা। আমি এতক্ষণ ভালো ভালো খাবারের কথা ভাবছিলুম আর ব্যাটা দুম করে আলুরচপ নিয়ে হাজির হলো! তোর মাথাটা সত্যিই আলু থাসাতেই ভর্তি।

( মিলন মেলাতে চারমূর্তীর প্রবেশ )

ক্যাবলা = আরিব্বাস! এতো খাবারের দোকান!

টেনিদা = গাল বন্ধ কর ক্যাবলা। মাছি ঢুকে যাবে। আয় আমার পিছনে পিছনে আয়। প্রথমে মাছ দিয়েই শুরু করা যাক! কি বলিস হাবুল?

হাবুল = তাই হোক। তবে আমি আগে একটু জলের বোতলটা ভরে নিই। খেতে খেতে যদি বিশম লাগে!

টেনিদা = হ্যাঁ এটা ঠিক বলেছিস, খাবার আগে 'জল ধর, জল ভর'।

( মাছের স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে )

টেনিদা = ইলিশ ভাপা, সরষে পাবদা, ভেটকির পাতুরি, তোপসের ফ্রাই, তেলকই, চিতলের মুইঠ্যা, চিলি পমপ্লেট , দই কাতলা আর তিনটে ফিস ফিঙ্গার।

চারজনে টেবিলে বসে আছে। টেনিদার অর্ডার শুনেই প্যালার মুখ থেকে জল টপে পড়ছিল। ওয়েটার পদ গুলি দিয়ে যেতেই হাবুল ক্যাবলা আর প্যালার প্লেটে একটা করে ফিস ফিঙ্গার তুলে দিয়েই বাকি প্লেট গুলো নিজের দিকে টেনে নিলেন।

প্যালা = এটা কি হলো টেনিদা! তুমি একা এতগুলো পদ খাবে আর আমাদের কপালে মাত্র একটা ফিস ফিঙ্গার!

টেনিদা = (ভেটকির পাতুরিটা গালে দিয়ে ) কতোবার তোকে বলেছি, সবসময় 'মিনিমাম' খাবি। আমার মতন 'ম্যাক্সিমাম' খেলে হজম করতে পারবি না।

হাবুল = (প্যালাকে উদ্দেশ্য করে) টেনিদা তো ঠিক কইসে, তাছাড়া একটা আস্ত ফিস ফিঙ্গার কি কম খাওয়া! (ফিসফিস করে) চেপে যা প্যালা, নাহলে ঝাল গাঁট্টা খেতে হবে।

টেনিদা = ( সবগুলো প্লেট খালি করে ) এই রে! মাছ খাবার পর হঠাৎ খিদেটা বেড়ে গেলো মনে হচ্ছে! চল ক্যাবলা একটু মাংসের আইটেম গুলো টেস্ট করে দেখি!

ক্যাবলা = বলছিলুম কি টেনিদা, একটু চাইনিজ খেলে হতো না?

টেনিদা = না একদম নয়! উরি হামলায় আমার দেশপ্রেম জাগ্রত হবার পর থেকেই আমি সমস্ত চাইনিজ খাবার বর্জন করেছি। তোরা যদি খাস তাহলে তোরা দেশদ্রোহী হয়ে যাবি।

হাবুল = তাহলে চাইনিজ খাইয়া আর কাম নাই! চল অন্য কিছু খাই!

প্যালা = আচ্ছা টেনিদা, থাই ইটালিয়ান বা কন্টিনেন্টাল খাবর তো খাওয়া যেতেই পারে। ওটাতে তো কোনো আপত্তি নাই!

টেনিদা = ব্যাটা পিলে রুগী, গুড়জল খেলে অম্বল হয়। তাও দ্যাখো খাই খাই, বলে কি না খাবে থাই!

( মাংসের স্টলের সামনে গিয়ে )

টেনিদা = কি কি আইটেম আছে?

ওয়েটার = কোয়েল বিরিয়ানি, টার্কি গন্ধরাজ, তন্দুরি কোয়েল, রোস্টেড ডাক, এমু, পর্ক, খরগোশ। কি খাবেন বলুন?

ক্যাবলা = দাদা এটা ফুডস্টল নাকি চিড়িয়াখানা?

টেনিদা = কচি পাঁঠার ঝোল পাওয়া যাবে?

ওয়েটার = সরি স্যার! পাঁঠার আইটেমের জন্য একটা পাঁঠা আমরা রেখেছিলাম বটে কিন্তু কদিন আগেই তাকে কোর্টের নির্দেশে ছেড়ে দিতে হয়।

টেনিদা = তাহলে ঐ কোয়েল বিরিয়ানি চারপ্লেট আর একটা রোস্টেড ডাক দিয়ে দাও।

ক্যাবলা = আচ্ছা টেনিদা, কোয়েল বিরিয়ানি আর পটলডাঙার কাউয়া বিরিয়ানি কি একই!

টেনিদা = দ্যাখ ক্যাবলা, আর একবার যদি এমন অপপ্রচার করিস তাহলে তোর কান টেনে কালীঘাটে পাঠিয়ে দেব কিন্তু!

( বিরিয়ানি খেতে খেতে)

প্যালা = বিরিয়ানির স্বাদটা যেন কেমন! মনেহয় ২টাকা কেজি চাল দিয়ে বানিয়েছে।

টেনিদা = দ্যাখ প্যালা, খেতে না ভালো লাগে আমার প্লেটে দিয়ে দে। কিন্তু কুৎসা করবি না! সমস্ত রান্না পতঞ্জলীর খাঁটি আয়ুর্বেদীক মাল দিয়েই করা হয়েছে। এমনকি সরষের তেলটাও বিশুদ্ধ 'সিঙ্গুর সরষের তেল' ব্যবহার করা হয়েছে। ওরে হাবুল আমি আর উঠতে পারছি না। তুই মিস্টির স্টল থেকে গোটা কুড়ি ল্যাংচা নিয়ে আয় তো!

( হাবুল ২০টা ল্যাংচা নিয়ে এলো)

প্যালা = এর পরেও ২০টা ল্যাংচা খাবে!

টেনিদা = ( মিষ্টির প্লেটটা থেকে শেষ ল্যাংচাটা গালে পুরে আঙুল চুসতে চুসতে ) আমি একটু বেশি খাই বলে তোদের হিংসে হয়, তাই না রে!

হাবুল = আরে না না! তুমি আর এমনকি বেশি খাও! পরের বছর আবার সবাই মিলে খেতে আসা হবে। আর আমি যেহেতু এত বছর পর টেটে পাশ করেছি তাই পরের বছর সব খরচ আমার।

টেনিদা = (চিৎকার করে ) লা গ্ল্যান্ডি ... ইয়াক ইয়াক।

Friday 14 October 2016

বিজয়ার পেন্নাম

                             ✍ বিজয়ার পেন্নাম 
দশমীর দুদিন পরে হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে একটু ভিড় হালকা হতেই সন্ধ্যাবেলায় বিজয়ার প্রণাম করতে হাজির মদনা আর মৃনাল। বৈঠকখানার ঘরে দুজনেই বসে অপেক্ষা করতে লাগল দিদিমনির। 

মৃনাল = যাক বাবা, অবশেষে জেলের বাইরে পুজো কাটালুম। ভেবিছিলুম এজম্মে বুঝি আর পুজো দেখা হবে না!

মদনা = তা যা বলেছিস ভাই! আমি তো ভেবিছিলুম এবছরের নবমীতেই বোধহয় বলি দিয়ে দেবে আমাকে!

মৃনাল = অনেকদিন পর পুজোটা চুটিয়ে এনজয় করলুম। অনেকগুলো প্যান্ডেল ঘুরে দেখলুম।

মদনা = আমি তো ভাই ভবানীপুর ছেড়ে বেরুতে পারলুম কই! তবে জেলের থেকে ঢের ভালো। তা হ্যাঁরে, শুনলুম তোর জামিন নাকি মাত্র ২লাখেই হয়ে গেছে? আমার বেলায় ৩১লাখ নিলো কেন তাহলে?

মৃনাল = তুই তো 'পোভাবশালী' তাই তোর স্পেশাল রেট। আমার রেটটা ঐ বিষ মদ, ক্লাব অনুদান, শহীদ স্মরণের মতন গড়পত্তা আরকি! তাছাড়া আমি তো শুধু টাকাই খেয়েছি। তুই তো টাকাও খেয়েছিস আবার এনজয়ও করেছিস।

মদনা = বাজে কথা বলিস না! আমি বেশি খাইনি!

মৃনাল = সে তুই বিন্দু বিন্দু করে কতটা খেয়েছিস সেটা সবাই জানে। আসলে খাওয়ার সময় তোর কোনো হুঁশ থাকেনা আর খাওয়ার পর আর উঠে দাঁড়াতে পারিস না।

মদনা = তোর কাছে কোনো প্রমাণ আছে? শুধু শুধু কেন কুৎসা করছিস আমার নামে!

মৃনাল = দ্যাখ ভাই! আর মুখ খোলাস না! খাওয়ার পর তোর কি অবস্হা হয় সেটা নারদার ভিডিওতে সবাই দেখেছে।

( এমন সময় দিদিমনি বৈঠকখানার ঘরে প্রবেশ করলেন। দুজনেই এক সঙ্গে 'দিদি গো' বলে পায়ের উপর লুটিয়ে পড়ল। দিদি দুজনের মাথায় স্বস্নেহে তার মমতাময়ী হাত দুটো রাখলেন। )

দিদিমনি = ওরে হয়েছে, হয়েছে! এবারে ওঠ!

মৃনাল = দিদি, আমি তোমার জন্য তোমার প্রিয় ল্যাংচা এনেছি।

দিদিমনি = (একটা ল্যাংচা তুলে কামড় দিয়ে ) আহা! কদ্দিন এমন ল্যাংচা খেতে পারবো কে জানে! হাবটা বোধহয় আর করা হবেনা!

মদনা = দিদি, আমি তো এখন 'অভাবশালী' তাই নতুন গুড়ের বাতাসা এনেছি।

দিদিমনি = তুই যে গুড়ের কিছু এনেছিস সেটা আমি ঘরে ঢুকেই বুঝতে পেরেছি। আর 'পোনাম' করে যখন উঠলি তখন বুঝলাম গুড়জল খেয়েও এসেছিস।
(মদনা লজ্জায় মাথা নিচু করে ব্যাপারটা চাপতে গেল অমনি একটা ঢেকুরের সাথে গোটা ঘর দিশির গন্ধে ভরে গেল।)

মদনা = (অভিমানের সুরে) তুমি আমাকে একটুও ভালোবাস না! এতদিন ধরে জেলে ফেলে রেখে দিলে! কতো কষ্ট হয়েছে আমার তুমি জানো!

মৃনাল = তুই কদিন বা জেলে কাটিয়েছিস! সারাক্ষণ তো উডবার্ণেই শুয়েই কাটিয়ে দিলি। জেলে আবার তোর জন্য মিউজিক সিস্টেম থেকে রঙীন জল, রাজকীয় আয়োজন ছিল। আমার অবস্হাটা ভাব! আমি তো ভেবিছিলুম দিদি আমাকে ভুলেই গেছ! তাই তো অভিমানে দু-চারটে কথা বলেছিলুম।

দিদিমনি = ওরে আমি তোদের সব কষ্ট বুঝি! CIB কে সামলানো কি 'চাড্ডি'খানি কথা! কতোবার এজন্য দিল্লি যেতে হয়েছে জানিস! দুটো আসন কুরবানী দিতে হয়েছে। তারপর আবার নারদের ঝামেলা। ওটাকে আগে না সামলালে আমার পুরো মন্ত্রীসভাই তো এতদিন জেলে পুজো সেলিব্রেশন করতো!

মৃনাল = দিদি, কোনো পদ খালি নেই? আমরা কি না খেতে পেয়ে মারা যাবো!

মদনা = মাইরি বলছি, তোমার দিব্যি! এবার থেকে মিনিমামই খাবো, আর ম্যাক্সিমাম নয়!

দিদিমনি = মরণ! তোর যা অবস্হা তাতে মিনিমাম খেলেও প্যানিক অ্যাটাক হবে।

মদনা = তুমি মিছিমিছি আমাদের দূরে সরিয়ে রাখছ! আজ রেড রোডে তো আমাদের দুজনের জন্য দুটো আসনের ব্যবস্থা করতে পারতে! কি সুন্দর সিঁদুর খেলা হচ্ছিলো!

দিদিমনি = সামনে বছর মহালয়া থেকেই সব প্যান্ডেল চালু করে দেব। আর ৭৫ টা ক্লাবকে ডাকবো। তার পরের বছর ২১৪টা ক্লাবকে ডাকবো। 'প্যান্ডেলশ্রী' 'পোতিমাশ্রী' পুরস্কার দেব। তখন তোদেরকে নিশ্চয়ই ডাকবো!

মৃনাল = ওরে মদনা, এবারে তো স্বভাবটা পাল্টা!

দিদিমনি = শোন দুদিন বাদেই দেবজানীরও জামিন হয়ে যাবে। আর মাসখানেকের মধ্যেই দীপ্তটার জামিন হয়ে গেলেই, আবার সবাই মিলে ডেলো ঘুরতে যাবো। (উদাস হয়ে) কতদিন হয়ে গেলো আমার একটাও পেন্টিং আর বিক্রি হয়নি....

বেরোনোর সময় দিদিকে আবার দুজনে প্রণাম করে, মদনার এক চ্যালার মোটর বাইকে চাপাচাপি করে তিনজনে বসল। কারোর মাথায় হেলমেট নেই! দিদি বলল, সাবধানে যাস! বাইক স্টার্ট নিয়ে টলমল করে এগোতেই মদনা হাত তুলে বলল, সেভ ড্রাইভ সেফ লাইফ।

(এটি কাল্পনিক কথপোকথন। বাস্তবের সাথে এর কোনো মিল থাকলে সেটা কাকতালীয়)

Wednesday 5 October 2016

কালো এটিএম কার্ড

                                                      কালো এটিএম কার্ড
আজ সকালে কার্তিক'দার মোবাইলে SBI থেকে ম্যাসেজ এলো,' Your SBI AC BPJ420 is credited by Rs 15,00,000'. কার্তিক'দা তো দেখে হাঁ! প্রথমে ভাবলো মনেহয় পুজোর আগে বকেয়া DA-টা বুঝি ঢুকলো! তারপর ভালো করে আবার কটা শূন্য আছে গুনলো। নাহ এতোটা DA তো বকেয়া নেই! তাহলে কি ভুল করে অন্য কারোর অ্যাকাউন্টের টাকা চলে এলো!

প্রথমে ঠিক করেছিল ব্যাঙ্কে যাবেনা। পরে মনটা খচখচ করতে লাগলো, হাজার হোক এতো গুলো টাকা! তাই একটু খোঁজখবর নিতে দুপুর ১টা নাগাদ খাওয়া দাওয়া করে মোহনের দোকান থেকে একটা পান গালে পুরে চিবাতে চিবাতে গুটি গুটি পায়ে ব্যাঙ্কের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখলেন হুলস্থূল কান্ড! প্রচুর লোক হাজির। সবারই অ্যাকাউন্টে নাকি টাকা ঢুকেছে। ব্যাপারটা কি সেটা বুঝতে ভিড় থেকে পাশ কাটিয়ে ম্যানেজারের ঘরে ঢুকলেন। ম্যানেজারের সাথে কথা বলে তো কার্তিক'দা একেবারে হাঁ হয়ে গেলো!

ম্যানেজার বলল, বিদেশ থেকে ৬৫ হাজার ২৫০ কোটি কালো টাকা উদ্ধার হয়েছে। এটা তারই একটা অংশ। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন মনে নেই! কার্তিক'দা বলল, হরেন'দা, হাবুলের মা, ওরাও তাহলে টাকা পেয়েছে? ম্যানেজার মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। কার্তিক'দা ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করলো, তাহলে বাইরে কাউন্টারের সামনে বাগদী পাড়ার লোকগুলো হল্লা করছে কেন? রহিম চাচাকেও দেখলুম ওদের সাথে! ম্যানেজার ফিসফিস করে বলল, 'মশাই চেপে যান! আসলে দলিত আর সংখ্যালঘুদের ১৫০০টাকা করে দেওয়া হয়েছে।'

তারপর ম্যানেজার একটা কুচকুচে কালো ATM কার্ড বার করে কার্তিক'দাকে দিয়ে বললেন, 'এটা রাখুন, এই টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে খরচ করতে হলে এটা লাগবে। এটা ছাড়া টাকা তোলাও যাবেনা, খরচও করা যাবেনা!' কার্তিক'দা কার্ডটা হাতে নিয়ে দেখল পিছনে একটা গরুর ছবিও আছে। কার্তিক'দা অবাক হয়ে গরুটির ছবি দেখছে দেখে ম্যানেজার বলল, 'মশাই ওটা ফোটোশপ, আসল গরু নয়!' 'আচ্ছা এটার পাসওয়ার্ড কি?' বলাতে ম্যানেজার জানালেন এটা ভয়েস কোডে খোলে। আপনার ভয়েসটা আমরা এটার মধ্যে সেট করে দেব। আপনি শুধু কার্ডটা পাঞ্চ করে তিনবার 'জয় শ্রীরাম' বলবেন। তাহলেই টাকা বেরিয়ে আসবে।

এবারে ম্যানেজার কার্তিক'দাকে বোঝাতে লাগলেন যে এই ATM কার্ডে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে আর কোথায় কোথায় এটি ব্যবহার করা যাবেনা। এই কার্ডটি ব্যবহার করে পতঞ্জলীর যেকোনো প্রোডাক্ট কিনলে আপনি ফ্ল্যাট ৫০% ছাড় পেতে পারেন। এই কার্ডটি ব্যবহার করে কোনো চায়নিজ প্রোডাক্ট কেনা যাবেনা। পাকিস্তানী বা বাংলাদেশী মিউজিক অ্যালবামও কিনতে পারবেন না। এটিকে যেকোনো পোশাকের দোকানে ব্যবহার করতে পারেন। ৬-৬০ যেকোনো বয়সের ছেলেদের হাফ প্যান্টে আপটু ৫৬% পর্যন্ত ডিসকাউন্ড। তবে মেয়েদের স্বল্প কাপড়ের পোশাক এটাতে কেনা যাবে না। আপনি দশ সন্তান পর্যন্ত মাতৃত্বকালীন ও হাসপাতালের সমস্ত খরচের উপরেও ছাড় পেতে পারেন এই কার্ড ব্যবহার করে। তবে কন্যা সন্তানের জন্ম হলে কিন্তু ছাড় পাবেন না! এই কার্ডটি আপিন ব্যবহার করে যেকোনো রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন। কার্তিক'দা জিজ্ঞেস করল ' মোক্যাম্বোতেও?' হ্যাঁ যেকোনো, তবে কোনো বিফ বা পর্ক আইটেম খাওয়া যাবেনা। আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ যদি কোনো যোগা অনুশীলন কেন্দ্রের সাথে যুক্ত থাকেন তাহলে তার মাসিক পেমেন্টটাও এই কার্ডের মাধ্যমে করতে পারেন।

তবে কার্ডটিকে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন মানে স্বচ্ছ রাখবেন আর রিনিউ করার জন্য ব্যাঙ্কে আসার দরকার নেই! কাছাকাছি কোনো মন্দিরের পুরোহিতের কাছে শনি মঙ্গলবারের রিনিউ করালেই হবে। আর প্রতিবার কিছু কেনাকাটা করলে সেই দোকানের মালিকের সাথে এই কার্ডটি হাতে নিয়ে কিন্তু অবশ্যই একটা সেলফি তুলে রাখবেন।

Tuesday 4 October 2016

দেবীর আগমন

                                      দেবীর আগমন
দেবী আগে থেকেই হোয়াটস অ্যাপে খবরটা পেয়ে গিয়েছিল যে এবারে পুজোর ছুটি পঞ্চমী থেকেই, তাই আগে থেকেই প্যাকিং শুরু করে দিয়েছিল। কার্তিকের কলেজ এমনিতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ আর গণেশের স্কুল তো ডেঙ্গুর জন্য একমাস ধরে ছুটি। সরস্বতী খুব খুশী, এবারে টেট পরীক্ষায় পাশ করেছে। তবে দেবীর একটাই আফসোস, নেশা খোর বাপটা যদি টাকা পয়সা গুলো চিটফান্ডের পিছনে না ওড়াতো তাহলে হয়তো কিছু টাকা অনুদান দিয়ে মেয়ের চাকরির ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যেত। তবে লক্ষ্মীর মনটা খারাপ! আই ফোন সেভেন কিনবে ঠিক করে রেখেছিল। তখন কি জানতো যে শিল্প চাষ দুটোরই ! ওর আসার একদম ইচ্ছে নেই!
পোলাপান নিয়ে দেবী পাহাড়ে ল্যান্ড করতেই বুঝতে পারলেন আবহাওয়া ভালো নয়! আকাশ গুরুং গুরুং করছে। মনে মনে নারদকে দুটো কাঁচা খিস্তি দিয়ে বললেন, 'হতচ্ছাড়াটা বলল কোনো সমস্যা হবেনা! পাহাড় জঙ্গল সবই এখন দাঁত ক্যেলিয়ে হাসছে। চারিদিকে কেবল উন্নয়নের জোয়ার! ব্যাটা ঢপবাজ। এখন বুঝলাম ব্যাটা ভুঁইয়ার সাথে কেন এতো ফেসবুকে চ্যাট করতো!" বাধ্য হয়েই একরাত ডেলোতে কাটিয়ে পরেরদিন রওনা হবেন স্থির করলেন।
সকালে উঠে আবার আরেক ঝামেলা! লক্ষ্মী আর সরস্বতী দুই বোনে ঝগড়া লেগে গেছে। লক্ষ্মী বলছে BMW তে যাব, আর সরস্বতীর বায়না VOLVO। দুর্গা যখন দুই বোনের ঝগড়া সামলাতে ব্যস্ত, তখন কার্তিক তার রয়্যাল এনফিন্ড স্টাট দিয়ে গণশাকে পিছনে নিয়ে বলল, ' তোমাদের ঝগড়া শেষ হলে তোমরা এসো! আমরা এগোলাম"। অনেক কষ্টে দুই বোনকে বুঝিয়ে শেষে OLA বুক করে দেবী রওনা দিলেন। মাঝ পথে হঠাৎ কার্তিকের ফোন, " মা, বাইকের তেল শেষ! পাম্পের লোক বলছে হেলমেট না থাকলে তেল মিলবে না! আমি আমাজনে একটা হেলমেট বুক করেছি। ওটা আসলেই তেল ভরে বেরিয়ে পড়বো। দেরি হলে চিন্তা করো না!"
দূর্গা কোলকাতা পৌঁছে জানলো যে তার আসতে দেরী হচ্ছে দেখে দিদি প্যান্ডেল উদ্বোধন করা শুরু করে দিয়েছে। দূর্গা রেগে গিয়ে তখন নবান্নে ফোন লাগালেন, 'কি ব্যাপার কি! আমি আসার আগেই উদ্বোধন হয়ে গেলো!" ওপার থেকে উত্তর এলো,'আমাকে এবছর ২১৪টা (২১১+বোনাস ৩) প্যান্ডেল উদ্বোধন করতে হবে। তাছাড়া আমরা কোনো কাজ ফেলে রাখা মোটেই পছন্দ করিনা। আমরা সবসময় রেডি থাকি রে"! দেবী মনে মনে ভাবলো, স্বর্গ থেকে মর্তে আসতে আমার কি তাহলে ৩০০বছর লেগে গেলো! তারপর দেবী বলল,'আমার পুজো, আমারই পারমিশন নেওয়ার প্রয়োজন হলো না! এটা কিন্তু অন্যায়।" ওপার থেকে উত্তর, 'কুৎসা করবেন না! রাজ্যে গণতন্ত্র আছে! আইন আছে! আইন আইনের পথে চলে! ৩৪ বছর আপনি আপনার ইচ্ছে মতন চলেছেন, আর নয়! ভুলে যাবেন না আমিও শীঘ্রই সেন্ট উপাধি পেতে চলেছি!"
হতাশ হয়ে এবারে দুর্গা বলল,' কোন অসুরটাকে মারবো সেটা তুমিই তাহলে ঠিক করো! একটা যদিও বা জেলে বন্দি ছিল সেটাকেও জামিন করিয়ে দিলে! আরেকটার তো এমনিতেই অক্সিজেন কম যায়! ও ব্যাটা তো লড়তেও পারবে না! আবার নতুন নিয়ম করেছ, সিন্ডিকেট থেকে যে অসুর নিয়ে কাজ চালিয়ে তাতেও হাজার ঝামেলা! কোন মালটা মিনিমাম আর কোনটা ম্যাক্সিমাম সেটা বুঝতেই তো বছর ঘুরে যাবে!' ওপার থেকে, " আপনাকে বেশি চাপ নিতে হবেনা! আমি অধিকারীকে বলে দিয়েছি, ও অটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে অসুর অপহরণ করতে। পেলেই ফোন করবে।"